Breaking News
Home / বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি / আবারও সাইবার হামলার আশঙ্কা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে – কিন্তু কেন?
সাইবার হামলার আশঙ্কা
সাইবার হামলার আশঙ্কা

আবারও সাইবার হামলার আশঙ্কা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে – কিন্তু কেন?

আবারও বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কায় বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় সাইবার সিকিউরিটি টিম না থাকায় তথ্য চুরির ঘটনা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে দেরি হচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমানকে লেখা এক চিঠিতে এই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। গত ৯ আগস্ট তিনি এই চিঠিটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। পাঁচটি সুইফট বার্তার মাধ্যমে চুরি হওয়া এই অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার ফেরত আসে। তবে ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বেশ কয়েকটি জুয়ার টেবিল ঘুরে হাতবদল হয়। এর মধ্যে দেড় কোটি ডলার ফেরত এলেও বাকি অর্থ উদ্ধারে এখনও তেমন কোনও অগ্রগতি নেই। এমনকি পুরোবিশ্বে আলোচিত এই সাইবার চুরির পেছনে কারা জড়িত, তা জানা যায়নি এখনও।

 

বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা এই রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি অর্থমন্ত্রীর কাছে অনেক আগে প্রতিবেদন জমা দিলেও এ পর্যন্ত তা প্রকাশ করা হয়নি। মোস্তাফা জব্বারের লেখা চিঠিতে বলা হয়, সরকারি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) কর্তৃক সাইবার নিরাপত্তা টিম গঠন করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে সাইবার সেন্সর স্থাপন করা হয়েছে। ওই সেন্সর হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পরিলক্ষিত হয় যে, ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটারে সাইবার অপরাধীরা ম্যালওয়্যার স্থাপন করেছে যা ব্যবহারকারীর অগোচরে ব্যবহারকারীর পরিচয় ও পাসওয়ার্ড কাজাখস্তান, রোমানিয়া, জাপান ও চীনে চিহ্নিত সাইবার অপরাধীদের কাছে সংবেদনশীল তথ্য অনবরত প্রদান করছে। চিঠিতে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে।

চিঠিতে সতর্ক করে বলা হয়, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বলে চিঠিতে জানানো হয়।
জানা গেছে, এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংককেও সাবধান করে চিঠি দিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে সাইবার হামলা সংক্রান্ত একটি চিঠি মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়ার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে মোস্তাফা জব্বার লিখেছেন, মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে সতর্ক করা হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রয়োজনীয় সাইবার সিকিউরিটি টিম না থাকায় তথ্য চুরির ঘটনা বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে দেরি হচ্ছে বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী চিঠিতে সাইবার নিরাপত্তা টিম গঠনের প্রস্তব করে বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সাইবার নিরাপত্তা টিম গঠনসহ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, সাইবার হামলার মাধ্যমে রিজার্ভ চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

আরও পঠিত খবর

ব্যাংক এটিএম কার্ড

যেভাবে এটিএম কার্ডের তথ্য এবং পিন চুরি হয়ে যেতে পারে – দেখুন

বিশ্বজুড়ে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে প্রতারণা বেড়ে চলেছে। তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে বাংলাদেশেও এটি আলোচিত বিষয়। প্রায়ই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *