তুরস্কের ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে হত্যা করা সৌদি আরব থেকে নির্বাসিত সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে জীবিত অবস্থায় টুকরো টুকরো করা হয়। খণ্ড বিখণ্ড হওয়ার ৭ মিনিটি পর সৌদি রাজপরিবারের এই সমালোচকের মৃত্যু হয়।
তুরস্কের একাধিক সূত্রের বরাদ দিয়ে বুধবার (১৭ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এখবর দিয়েছে।
একটি অডিও রেকর্ডিংয়ের বরাতে ডেইলি মেইল জানায়, খাশোগিকে কোনো রকম জিজ্ঞাসাবাদ করার চেষ্টা করা হয়নি। তাকে খুন করাই ছিল হত্যাকারীদের মূল উদ্দেশ এবং তারা তাই করেছেন।
খাশোগি নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তুরস্ক। তাদের এক এই সংক্রান্ত একটি অডিও ক্লিপ আছে বলে দাবি করে আঙ্কারা।
ওই অডিও রেকর্ডিং পুরোপুরি শুনেছেন এমন এক তুর্কি সূত্র মিডল ইস্ট আইয়ের কাছে দাবি করেন, ২ অক্টোবর মাত্র ৭ মিনিটে পুরো হত্যাকাণ্ড সম্পাদিত হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে ১৫ সদস্যের একটি দল অংশ নেয়। তাতে নেতৃত্বে দেন হত্যার আগের দিন ব্যক্তিগত বিমানে তুরস্ক আসা সৌদি আরবের জেনারেল সিকিউরিটি বিভাগের ফরেনসিক প্রমাণ সংক্রান্ত প্রধান সালাহ মোহাম্মদ আল তুবাইগি।
সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ‘দূতাবাসের কনস্যাল জেনারেলের অফিস থেকে খাশোগিকে টেনহিঁচড়ে কনস্যাল জেনারেলের পড়ার ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেসময় উপরে প্রচণ্ড চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখানে নিচতলায় উপস্থিত থাকা এক ব্যক্তি। কিছুক্ষণ পর তার চিৎকার বন্ধ হয়ে যায়। কারণ তাকে চেতনানাশক কিছু দেয়া হয়েছিল।’
সূত্র দাবি করেছে, খাশোগিকে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও আলামত দেখা যায়নি। তাকে হত্যা করতেই স্কোয়াডটি এসেছিল। স্টাডি রুমের টেবিলে উপর শুইয়ে খাশোগিকে জীবিত অবস্থায় কেটে টুকরো টুকরো করেন তুবাইগি। পুরো হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে সময় লেগেছে মাত্র সাত মিনিট।
তুবাইগি যখন খাশোগিকে কাটতে শুরু করেন তখন তিনি ইয়ারফোনে উচ্চস্বরে গান শুনছিলেন। এছাড়া এসময় তিনি তার সহকর্মীদেরও গান শুনতে উৎসাহ দেন। ওই রেকর্ডে তুবাইগিকে বলতে শোনা গেছে,‘যখন আমি এ কাজ করি তখন গান শুনি। আপনাদেরও এটা করা উচিত।’
উল্লেখ্য, সৌদি যুবরাজ সালমানের কট্টর সমালোচক আমেরিকায় স্বেচ্ছা-নির্বাসনে থাকা জামাল খাশোগি তার তুরস্কে থাকা বান্ধবীকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সৌদি কনস্যুলেটে যান। কিন্তু সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি।