Breaking News
Home / আন্তর্জাতিক / রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য ৪ টি সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সরকার
রোহিঙ্গা সংকট - Rohingya Crisis

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য ৪ টি সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সরকার

রাখাইনে রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ হোতা হিসেবে শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের দায়ী করে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে জাতিসংঘে আলোচনা হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপের কথা হয়নি। এদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনের পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমার কর্তৃক চারটি আশু পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গত মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এ সুপারিশ করেন।

জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে গণহত্যা, ধর্ষণ ও সাত লাখের বেশি মানুষকে তাদের ঘর থেকে বাস্তুচ্যুত করাসহ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংশতা উঠে এলেও উন্মুক্ত ব্রিফিংয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা সুনির্দিষ্ট শাস্তিমূলক পদক্ষেপের কোনো কথা বলেনি।

এমনকি বক্তব্যে ওই প্রতিবেদনের উল্লেখ করলেও গুতেরেজ নিজে একবারও গণহত্যা শব্দটি উচ্চারণ করেননি বলে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গত সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আইন প্রয়োগের নামে ভয়ঙ্কর অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে

সেখানে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। আর মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু কির বেসামরিক সরকার ‘বিদ্বেষমূলক প্রচারকে উসকে’ দিয়ে, গুরুত্বপূর্ণ ‘আলামত ধ্বংস’ করে এবং সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা না করে সেই নৃশংসতায় ‘ভূমিকা’ রেখেছে।

গত একবছর ধরে রোহিঙ্গা ইস্যু সামনে রেখে সমাধানে কাজ করে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ধন্যবাদ জানান জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহযোগিতা দেয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের পদক্ষেপসমূহের টেকসই বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরো উদারভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য এটি মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দেবে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের ফেরত যাওয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করার জন্য মিয়ানমারকেই এগিয়ে আসতে হবে। রাখাইন প্রদেশে স্থায়ী প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি হলেই কেবল বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে এগিয়ে আসবে। প্রত্যাবসনের পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমার কর্তৃক চারটি আশু পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সুপারিশ করেন তিনি। এগুলো হলো –

১. রাখাইন প্রদেশের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম ও শহরগুলোতে প্রয়োজনীয় মানবিক ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নে ইউএনডিপি ও ইউএনএইচসিআরকে বাধাহীনভাবে প্রবেশাধিকার দিতে হবে, যা মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পাদিত সমঝোতা স্মারকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

২. বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে আটকে থাকা কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত নেয়া এবং ফেরত না নেয়া পর্যন্ত মিয়ানমারের পক্ষ থেকেই তাদের মানবিক সহায়তা দিতে হবে।

৩. রাখাইন রাজ্যের আইডিপি ক্যাম্প উন্মুক্ত করে দিতে হবে এবং সেখানে আটক মানুষরা যাতে নিজ বাসভ‚মিতে বা তাদের অন্যকোনো পছন্দনীয় স্থানে পূর্ণ অধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে টেকসইভাবে প্রত্যাবর্তন করতে পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে

৪. রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাস ও পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং হিংসা উদ্রেককারী বক্তব্য ছড়ানো যা সহিংসতা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করে তা দমন করতে হবে।

জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান মিয়ানমারের : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নিধন ও নির্যাতনের ঘটনায় জাতিসংঘ পরিচালিত আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে অভিযুক্ত দেশ মিয়ানমার। দেশটির সরকারি মুখপাত্র জ হাতোইকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমার গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক খবরে বলেছে, ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনকে মিয়ানমারেই প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। তাই ওই প্রতিবেদন মিয়ানমারের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

আরও পঠিত খবর

চীনে ৫ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্প

চীনের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াংয়ের উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের জিনঘি কাউন্টিতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *