রোহিঙ্গা নির্যাতন তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) যে আদেশ দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। শুক্রবার (৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের কার্যালয় আইসিসির আদেশ প্রত্যাখ্যান করে এক বিবৃতিতে দেয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই আদেশ ত্রুটিপূর্ণ প্রক্রিয়া ও সন্দেহজনক আইনি কার্যক্রমের ফল। মিয়ানমার আইসিসির এই আদেশকে শ্রদ্ধা দেখাতে কোনোভাবেই বাধ্য নয়।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এমন সব অভিযোগ আনা হয়েছে যা ব্যক্তিগত ট্র্যাজিডির বর্ণনা থেকে সংগৃহিত, যার সাথে আইনি যুক্তিতর্কের কোনো লেনাদেনা নেই। মূলত আদালতের ওপর আবেগীয় চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক অভূতপূর্ব আদেশে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তিন বিচারকের প্যানেল মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন তদন্তে আদালতের সক্ষমতা দাবি করেন।
আইসিসির তরফ থেকে বলা হয়েছিলো, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার থেকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করার কর্তৃত্ব আদালতের রয়েছে।
তবে মিয়ানমারের দাবি, তারা যেহেতু আইসিসির সদস্য নয়, সেহেতু ওই আদালতে তাদের বিষয়ে বিচারের প্রশ্নই অবান্তর। এ কারণে বিচারিক এখতিয়ার প্রশ্নে আইসিসির চিঠির জবাবও তারা দেয়নি।
এমনিতে কোনো দেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য না হলে সেই দেশের সীমানায় সংঘটিত কোনো অপরাধের বিচার এ আদালত সরাসরি করতে পারে না। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সদস্য হলেও মিয়ানমার ওই আদালতের সদস্য নয়।
কিন্তু আইসিসির সদস্য বাংলাদেশ এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক আদালত বিষয়টিকে আন্তঃসীমান্ত অপরাধ বিবেচনা করছে। আর এর ফলে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক ওই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে মামলা ও তদন্ত শুরুর পথ খুলে গেছে।
রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই দমন-পীড়নের মুখে গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা।