ভূমিকম্প এবং তা থেকে সৃষ্ট সুনামিতে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া। দেশটির সুলাওয়েসি দ্বীপে ভূমিকম্পের পর ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে। ভূমিকম্প-সুনামির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু স্থাপনা।
দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, সুলাওয়েসি প্রদেশের পালু শহরে এখনও বহু মানুষ ঘর-বাড়ির নিচে চাপা পড়ে আছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হোটেল এবং শপিং সেন্টারের ধ্বংসস্তূপ থেকে আটকে পড়াদের উদ্ধারে ভারী যন্ত্রপাতির জন্য অপেক্ষা করছে উদ্ধারকারীরা।
উদ্ধার অভিযানের প্রধান মহম্মদ সায়ুগি বলেছেন, ‘‘ধ্বংসস্তূপ সরাতে প্রয়োজন শক্তিশালী যন্ত্রের। খসে পড়া বড় বড় কংক্রিটের চাঁই সরাতে যন্ত্র লাগবে। এই বিশাল কাজ মানুষের পক্ষে সম্ভব না।’’
হাত দিয়ে খুঁড়ে রোয়ারোয়া হোটেলের ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে ২৪ জনকে তুলেছেন উদ্ধারকারীরা। শহরের রাস্তায় পড়ে রয়েছে মৃতদেহের সারি। হাসপাতালগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় খোলা আকাশের নীচে চিকিৎসা চলছে আহতদের।
পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো সেনাবাহিনীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘উদ্ধার সংক্রান্ত কাজ দ্রুত শেষ করুন। প্রয়োজনে দিন-রাত এক করে কাজ করুন আপনারা।’’
এদিকে, দেশটির জাতীয় দুর্যোগ বিভাগ রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) তাদের সর্বশেষ যে হিসাব দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে শুক্রবারের ভূমিকম্প এবং তা থেকে সৃষ্ট সুনামিতে সুলাওয়েসি দ্বীপে কমপক্ষে ৮৩৪ জন মারা গেছে।
কিন্তু কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন হতাহতের সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়তে পারে। ইন্দোনেশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইউসুফ কাল্লা বলেছেন, নিহতের সংখ্যা ‘হাজার হাজার’ হতে পারে।
গত শুক্রবার শক্তিশালী ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের পরেই আছড়ে পড়ে ৩ মিটার উচু (১০ ফুট) সুনামি।
মার্কিন ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার একটু আগে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার মুখপাত্র সুতপো পারু নাগরোহো জানিয়েছেন, সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী পালু, ডোঙ্গালা ও অন্যান্য কয়েকটি উপকূলীয় এলাকায় তিন মিটার উচ্চতার সুনামি আছড়ে পড়ে।