বর্তমান টি-টোয়েন্টি যুগে চার-ছক্কার মারমার-কাটকাট যখন অবস্থা তখন ওয়ানডে ম্যাচে ২৩৯ রানকে তো রানই ধরা যায় না। অনেকেই রসিকতা করেও তো বলতে পারেন- আরে ভাই আজকাল তো টি-টোয়েন্টিতেই ২০০+ রান হয়! হয় বৈকি! কিন্তু রেশটা নিশ্চিতভাবেই আলাদা। টি-২০ আরও ওয়ানডে যে ভিন্ন ফরম্যাট ২৩৯ রান করেও ৩৭ রানের জয় নিয়ে মাশরাফির দল সেটি আরও একবার প্রমাণ করেছে।
কিন্তু এই জয়ের নেপথ্যে কী ছিল মাশরাফির মন্ত্র? শুনলে যে কেউ ভরকে যেতে পারেন। যাওয়ারই কথা। ক্রিকেট খেলা কি কোনও যুদ্ধ নাকি, যে সশস্ত্র সাজে রণাঙ্গণে শত্রুশিবিরের মুখোমুখি হতে হবে! আক্ষরিক অর্থে যুদ্ধ না হলেও ২২ গজে প্রচ্ছন্ন যে একটা লড়াই চলে দুদলের সেটা যুদ্ধের রক্তপাতের চেয়ে কম কীসে?
সুপার ফোরে ভারত আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একটি করে ম্যাচ জেতায় বুধবারের বাঁচা-মজার ম্যাচটি দুদলের জন্যই হয়ে উঠেছিল অঘোষিত সেমিফাইনাল। আর সেই সেমিফাইনালে টাইগারদের মূল প্রেরণা কী ছিল? গতকাল ম্যাচ শেষে সেই বীজমন্ত্রটিই শোনালেন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ মুশফিকুর রহিম।
অধিনায়ক মাশরাফির উদ্ধৃতি দিয়ে মুশফিক বলেন, ‘মাশরাফি ভাই আমাদের সবাইকে একটি কথাই বলেছিলেন, ‘যুদ্ধে নামলে পেছনে তাকানোর সুযোগ নেই। গা বাঁচিয়ে চলা যায় না। হয় মারবি, নয় মরবি। অধিনায়কের এ কথায় আমরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম।’
মাশরাফির কথা অনুপ্রেরণা পাওয়া দল যেন এক মুহূর্তেই বদলে গেলো। মুশফিকও ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সেটিই জানালেন, ‘এটা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা ফলাফল নিয়ে ভাবিনি। শতভাগ দেয়া নিয়ে ভেবেছি। সবাই সবার শতভাগ দিতে পারলে দিন শেষে আমরাই জয় পাব।’
শোয়েব মালিকের ক্যাচ নেয়ার পর মাশরাফিকে যদি ‘স্পাইডারম্যানের’ সঙ্গে তুলনা করা হয় তবে উইকেট কিপার মুশফিককে বলা দরকার ‘বাজপাখি’। নয়তো উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে সরফরাজের এমন একটি ক্যাচ কী করে তালুতে জমাতেন মুশফিক?
তবে শোয়েব মালিকের উইকেটটিই যে ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল সেটি উঠে এসেছে গতকাল ৯৯ রান করে আউট হওয়ার মুশফিকের কথাতেও। ‘তাকে আউট করাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আর ক্যাচটা তো অবশ্যই দুর্দান্ত ছিল। আল্লাহর রহমতে আমরা বুড়ো বয়সেও দু-একটা ভালো ক্যাচ ধরতে পারছি। সেদিক থেকে অনেক খুশি, মাশরাফি ভাইও খুশি, আমিও।’