Breaking News
Home / বাংলাদেশ / ৭ ছাত্রলীগকর্মীর ‘বহিষ্কারাদেশে’ প্রশাসনের টালবাহানা

৭ ছাত্রলীগকর্মীর ‘বহিষ্কারাদেশে’ প্রশাসনের টালবাহানা

সাংবাদিককে মারধর, ছিনতাই ও ছাত্রী লাঞ্ছনার অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের ৭ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ দিয়েও তাদের মধ্য থেকে ৩ জনের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

মঙ্গলবার (০২ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ৭ জনকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানা যায়।

এ সংক্রান্ত অফিস আদেশের কপিটি জাবি প্রতিবেদকের হাতে আসলে “৭ ছাত্রলীগকর্মী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার” শিরোনামে ব্রেকিংনিউজ.কম.বিডি একটি সংবাদ প্রকাশ করে।

সংবাদটি প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আবারও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) আবু হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে নতুন করে জানানো হয়, ‘৭ জনের মধ্যে ৪ ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, ‘৭ জনের বহিষ্কারের প্রথম অফিস আদেশটি আমি ভালো করে যাচাই না করেই স্বাক্ষর করি। পরে প্রকাশের আগে যাচাই বাচাই করে ৪ জনের বহিষ্কারের বিষয়টি প্রকাশ করি।’

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিষ্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, ‘ওই অফিস আদেশটি আমরা কোথাও প্রকাশ করিনি। এটা প্রকাশ করার পূর্বেই আমাদের কাছে ত্রুটি ধরা পড়েছে। তাই পরবর্তীতে আমরা সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করেছি।’

বহিষ্কৃত ৪ ছাত্রলীগ কর্মী হলেন- বাংলা বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শুভাশীষ ঘোষ, লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের ইয়া রাফিউ শিকদার, মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. সোহেল রানা। এরা সবাই শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র।

অন্যদিকে বহিষ্কারের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে- বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪২তম ব্যাচের নেজাম উদ্দিন নিলয়, লোক প্রশাসন বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের মো. আমিনুল ইসলাম ও মো. ইখতেয়ার উদ্দিন।

এ বিষয়ে মারধরের শিকার সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘নেজাম উদ্দিন নিলয়ের নেতৃত্বেই আমাকে মারধর করা হয়। অথচ তাকে বাদ দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৪ জনকে বহিষ্কার করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে ৭ জনকে বহিষ্কারের আবেদন চেয়ে সুপারিশ করেছিলাম। সেই তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৪ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

এদিকে গোপন সূত্রে জানা যায়, ৭ ছাত্রলীগ কর্মীর বহিষ্কারের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর বিশেষ মহলের চাপে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩ জনের নাম প্রত্যাহার করে। তারপর বিকেলে ফের মিটিং করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৪ জনের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ ৭ জন বহিষ্কৃতদের মধ্যে নেজাম উদ্দিন নিলয় শাখা ছাত্রলীগের আসন্ন হল কমিটির শহীদ রফিক-জব্বার হলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। তাই তাকে বাদ দিয়েই বহিষ্কার আদেশ প্রকাশ করতে বাধ্য হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাশসন। তবে এই বিষয়ে কেউ মুখ খুলতে নারাজ।

প্রসঙ্গত, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিল্লাল হোসেন নামের এক বহিরাগত তার বান্ধবীকে নিয়ে জাবির সুইমিং পুল এলাকয় ঘুরতে আসে। সেখানে ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মীরা বিল্লাল কে মারধর করে ও তার মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এই সময় ক্যাম্পাসে কর্তব্যরত এক সাংবাদিক বাধা দিলে তাকেও মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা। তাকে উদ্ধার করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীও মারধরের শিকার হয়। এই ঘটনায় ওই সাংবাদিক ও ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে গিয়ে রক্তপাত হয়।

আরও পঠিত খবর

‘নির্বাচনের আগে পরিবহন আইন পরিবর্তনের সুযোগ নেই’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সড়ক পরিবহন আইন পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *