বাংলাদেশ এখনও সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। তবে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটিতে সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি, সীমান্ত ও বিদেশে যাওয়া-আসার পয়েন্টগুলোতে বাংলাদেশের কঠোর নজরদারি প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়। তবে প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও।
একইসঙ্গে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের মাটিতে সংঘটিত জঙ্গি হামলার সংখ্যা কমলেও ‘ইসলামিক স্টেট’ বা আইএসের মতো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর হামলার ঝুঁকি এখনো পুরোপুরি দূর হয়নি।
২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত অন্তত ৪০টি হামলায় ভারতীয় উপমহাদেশীয় আল-কায়েদা (একিউআইএস) এবং আইএসআইএস দায় স্বীকার করেছে। তবে বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে যতবারেই জঙ্গি হামলা হয়েছে ততবারই সরকার স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সাম্প্রতিককালে সন্দেহভাজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ধরতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট যৌথ উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় সন্দেহভাজন সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হত্যাও করা হয়েছে।
বাংলাদেশ নিজেদের সীমান্ত ও বিমানন্দরের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের কট্টর ইসলামপন্থি সন্ত্রাসীরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে তাদের মতাদর্শ প্রচার করছে। এ দেশের বহু জঙ্গির নাম-পরিচিতি সন্ত্রাসী গঠনগুলোর ভিডিও, ওয়েবসাইট এবং বক্তৃতায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১৬ সালের তুলনায় ২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী হামলার পরিমাণ ২৩ শতাংশ কমেছে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। ২০১৬ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনেও দেখা যায়, ২০১৫ সালের তুলনায় সন্ত্রাসী হামলার পরিমাণ কমেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে গোটা বিশ্বে মোট ১০০টি দেশে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে আফগানিস্তান, ভারত, ইরাক, পাকিস্তান ও ফিলিপাইন এই ৫টি দেশেই ৫৯ শতাংশ হামলা হয়েছে। নিহতদের ৭০ শতাংশই আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া ও সিরিয়ার নাগরিক।