এশিয়া কাপ মিশন শেষে দেশে ফিরেছেন টাইগাররা। আরেকটি ফাইনাল, আবারো শেষ বল, ফের স্বপ্নভঙ্গ। রোমাঞ্চ ছড়িয়ে সেই হারের তেতো স্বাদ। শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এশিয়া কাপের ফাইনালে শেষ বলের ফয়সালায় ভারতের কাছে হেরে তৃতীয়বার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে বাংলাদেশের।
তবে ফাইনালি যে লড়াই করেছে টাইগাররা, তাতে শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে মাথা উঁচু করেই দেশে ফিরলেন তারা। রাত সাড়ে ১১টায় মাশরাফিদের বহনকারী বিমানটি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে তাদের শুভেচ্ছা জানায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
এর ২ ঘণ্টা পর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন টাইগার দলনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তাতে দেশের আমূল পরিবর্তন করতে আপামর জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহবানজ জানান তিনি।
তার স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
নাহ! এবারও হলো না! আমরা যখন মাঠে খেলি তখন শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করি দেশকে যেন জেতাতে পারি। মুশফিক পাঁজরের ব্যথা নিয়ে ব্যাটিং করে টানা তিন ঘণ্টা, সাকিব হাতে সেলাই নিয়ে খেলে, তামিম ভাঙা হাত নিয়ে নেমে পড়ে ব্যাটিং করতে। আমরা ক্রিকেটের ছোট পরিসরে একটা জয় দিয়ে যদি ১৬ কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি, তাহলে একবার চিন্তা করে দেখেন তো; যদি সবাই মিলে নিজের স্থান থেকে দেশের জন্য কিছু করি তাহলে দেশটার কি আমুল পরিবর্তন করতে পারি?
শুধু দরকার একটু দায়িত্ববোধ ও চেষ্টার। আসুন না, আমরা সবাই মিলে একবার চেষ্টা করেই দেখি এই লাল সবুজের পতাকাটার জন্য। আমরা প্রতিদিনই জেতার চেষ্টা করি, আজকে না হয় হারলাম; নিশ্চয়ই কালকে আবার জিতব। দেখা হবে আবার।
টুর্নামেন্টের শুরুতেই তামিম ইকবালকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। মাঝপথে সাকিব আল হাসানকে। অনেকেই ছিলেন ইনজুরি আক্রান্ত। সেই দল নিয়েই এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে টাইগাররা। সেই পথে বিদায় করেছে ক্রিকেট পরাশক্তি শ্রীলংকা, পাকিস্তান এবং নব্য শক্তি আফগানিস্তানকে।
শিরোপাটাও হাতের নাগালে ছিল তবুও নিজেদের করে নেয়া সম্ভব হলো না। আম্পায়ারদের বৈরিতা অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে ‘অভাগা’ দল বাংলাদেশ। ২২ গজে বারবার খেলাটার শুদ্ধতার প্রতীক আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তের কোপানলে পুড়তে হয়েছে টাইগারদের। সেঞ্চুরিয়ান লিটন কুমার দাসের ‘বিতর্কিত’ আউটটা যার জলন্ত উদাহরণ।
ওই সময়ে তিন ধারাভাষ্যকারই বলেছিলেন সিদ্ধান্তটা খুব কাছাকাছি ছিল। ভারতীয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের অনুষ্ঠানে নিউজিল্যান্ডের ধারাভাষ্যকার সাইমন ডুল রাখ-ঢাক না রেখেই বলেছেন, বেনিফিট অব ডাউট লিটনেরই প্রাপ্য ছিল। সেটা না দেয়ায় ভারতের জয়ে কিছুটা কলঙ্কের ছাপ থেকেই গেল।
সে যাই হোক শেষ কথা হলো দুবাইতে এশিয়া কাপের ফাইনাল জিতে নিয়েছে ভারত। ইতিহাসে সেটিই লেখা থাকবে। কিন্তু এটাও বর্ণিত থাকবে শেষ বল পর্যন্ত হাল না মেনে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল।
যেখানে ৫০ ওভারে সাড়ে ৩০০ রানও কখনও কখনও জয়ের জন্য নিশ্চিত মনে হয় না, সেখানে টাইগারদের স্কোর বোর্ডে মাত্র ২২২ রানের পুঁজি নিয়ে যেভাবে লড়াই চালিয়েছে তাদে মন ছুঁয়ে গিয়েছে পুরো ক্রিকেট বিশ্বের।