Breaking News
Home / বাংলাদেশ / কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঢেঁকি শিল্প
গ্রামবাংলার ঢেঁকি শিল্প
গ্রামবাংলার ঢেঁকি শিল্প

কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঢেঁকি শিল্প

জামালপুরে কালের বিবর্তনে গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে ঢেঁকি শিল্প। যেই নবান্ন ধান কাটার উৎসবের সাথে সাথে শীতের পিঠা বানানোর ধুম পড়তো গ্রামে গ্রামে। আগে যখন গ্রামগঞ্জের মা, চাচি, ও বউমা ঢেঁকিতে ধান, চাল ভানতো তখন এই গানটি গাইতো ‘ বউ ধান ভানোরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, ঢেঁকি নাচে বউ নাচে হেলিয়া দুলিয়া, বউ ধান ভানোরে। মা ও দাদিরা এমনও প্রবাদ বাক্য বলতো ‘ যার মার কুমিরে খায় তার ঢেঁকি দেখলে ভয় হয়। গ্রাম বায়লার চিরায়িত সেই ঢেঁকির ঢেঁকির তালে সেই গান আর প্রবাদ বাক্য আজ জামালপুরের গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে।

ঢেঁকির তালের শব্দে চালের গুড়া করতো মাঝরাত থেকে শুরু করে পরদিন ভোর পর্যন্ত । সেই ঢেঁকি আজ আধুনিকতার উৎকর্ষতার দাপটে গ্রামের নব বধুদের কাছে এখন শুধুই স্বপ্ন। যান্ত্রিকতার নির্মম আগ্রাসনে সেই ঢেঁকি এখন আর চোখে পড়ে না। আবহমান গ্রাম বাংলার প্রতিটি গ্রামেরবাড়িতে এক সময় ঢেঁকির প্রচলন ছিল। দিনান্তের কাজের মধ্যে বাড়ির নববধুসহ নারীদের ব্যস্ত সময় কাটাতে ঢেঁকির সঙ্গে। ঢেঁকিতে ধান ভেনে চাল বের করে রাতসহ পরবর্তী দিনের খাবার যোগাতেন গৃহবধূরা। তাই প্রতিদিন বিকেল হলে গ্রামে গ্রামে শোনা যেত ঢেঁকির শব্দ, সেই সঙ্গে বাহরি রকমের আঞ্চলিক গানে। ফলে শারিরিক দৈনন্দিন পরিশ্রমে নারীরা থাকতেন নি-রোগ, স্বাস্থ্যবান।

গাঁয়ের এ পাড়া অ পাড়ায় এক সময় ঢেঁকি দিয়ে চাল তৈরী, চিড়া ভাঙ্গা, আটা, পায়েসের চালের গুড়ো, খির তৈরির চাল, কুমড়ো আর কলাই দিয়ে সুস্বাদু সেই ডালের বড়ি বানানোর সেই ঢেঁকি আজ অসহায় হয়ে পড়েছে ইঞ্জিন চালিত মেশিনের কাছে। ধান ভানা, চাউল গুড়ো করা, বড়ি তৈরি করা, আটা তৈরি চালের গুড়াসহ ঢেঁকির যাবতীয় কাজ করছে ইঞ্জিন চালিত মিশিনে। ৭০ দশকের সর্বপ্রথম দেশে রাইস মিল বা মেশিন দিয়ে ধান থেকে চাউল বের করার প্রচলন শুরু হহয়, তখন থেকেই ঢেঁকির প্রয়োজনীয়তা দিন দিন হ্রাস পেতে থাকে।

বছর জুড়ে সারা দেশে তের পার্বন পালিত হতো। এসময় গ্রাম-গঞ্জের কৃষাণ কৃষাণীরাও নবান্ন উৎসব, হেমন্ত উৎসব, পৌষ উৎসব, বিয়ে উৎসব থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎসবে পিঠা তৈরীর ধুম পড়ে যেত। আধুনিকতার যান্ত্রিক কবলে গ্রাম-গঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এসব উৎসব আর ঢেঁকির ছন্দময় শব্দ।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়া ঢেঁকির প্রসঙ্গে গ্রামের প্রবীণ মা-বোনেরা বলেন, আমাদের সকল বান্ধবীরা একে অন্যের বাড়িতে যেয়ে নবান্নের চাউল উৎসবে মেতে ঢেঁকিতে চালগুড়ো করে নানা রকমের পিঠাপুলি বানাতাম আর একে অন্যের বাড়িতে যেয়ে খেতাম। এখন আর সেই দিন নাই। সব যেন স্মৃতি হয়ে গেছে।

আরও পঠিত খবর

‘নির্বাচনের আগে পরিবহন আইন পরিবর্তনের সুযোগ নেই’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সড়ক পরিবহন আইন পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *