বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হচ্ছে আগামীকাল সোমবার থেকে। এদিন দেবী দুর্গার মূল পূজা শুরু হয়ে আগামী শুক্রবার বিজয়া দশমী পর্যন্ত ঢাকের বাদ্যে মুখরিত থাকবে দেশের পূজামণ্ডপগুলো।
এই মহোৎসবকে ঘিরে পূজারী ও ভক্তরা উদ্বেলিত হবেন দেবী মহামায়ার অধিষ্ঠানে। সবাই শামিল হবেন পৃথিবীর সব আসুরিক শক্তির বিরুদ্ধে বিজয় ও মানুষের কল্যাণ প্রতিষ্ঠার প্রার্থনায়। পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারা দেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখর হয়ে উঠেছে বিভিন্ন পূজামণ্ডপ।
আর এই দুর্গাপূজায় বাড়তি ও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শারদীয় দুর্গোৎসবে কোনও ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করবেন।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি মণ্ডপ সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটর করা হবে, প্রবেশকালে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে হবে। এসব মণ্ডপে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুরো ঢাকা শহরে নিরাপত্তা চেকপোস্ট থাকবে। সম্মানিত ভক্তকুল ও দর্শনার্থীদের অনুরোধ জানাচ্ছি, পূজামণ্ডপে ছুরি, কাচি, পোটলা, ব্যাগ, ব্যাকপ্যাক নিয়ে আসবেন না। কারণ কাউকে এসব নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। শোভাযাত্রার সময় রুটে অবাঞ্ছিত লোক, হকারদের বসতে দেয়া হবে না। চলাচলের ক্ষেত্রে সড়কে ডাইভারশন দেয়া হবে।’
দশমীর দিনে শোভাযাত্রার কথা উল্লেখ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘শোভাযাত্রার রুট হবে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে বেরিয়ে পলাশীর মোড়, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, সরকারি কর্মচারি হাসপাতাল, গোলাপ শাহ মাজার হয়ে, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার হয়ে, সার্জেন্ট আহাদ পুলিশ বক্সের সামনে দিয়ে, নবাবপুর সড়ক দিয়ে রায় সাহেব বাজার মোড়, বাহাদুর শাহ পার্ক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, পাটুয়াটুলি হয়ে ওয়াইশঘাটে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে বিসর্জন হবে। শোভাযাত্রা ও বিসর্জন ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শোভাযাত্রার সামনে, পেছনে ও মাঝে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক করেছি। পূজায় সব ধরনের পটকা আতশবাজি, মাদকের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে। নিরাপত্তা সুবিধায় বিজয় শোভাযাত্রায় উচ্চস্বরে বাজনা বন্ধ থাকবে। বিসর্জনের সময় নদীতে নৌপুলিশ, ডুবুরিরা মোতায়েন থাকবে। সার্চলাইটের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।’
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘আমরা পূজা উদযাপন পরিষদের সাথে কয়েক দফায় বৈঠক করেছি। নিরাপত্তা সুবিধায় বিজয় শোভাযাত্রায় উচ্চস্বরে পিএ সেট বাজনা বন্ধ থাকবে। বিসর্জনের সময় নদীতে নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা মোতায়েন থাকবে। ফায়ার সার্ভিসের সার্চলাইটের মাধ্যমে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।’