সংবাদমাধ্যম সঠিক সংবাদ উপস্থাপন করতে পারছে না বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের মাধ্যমে আপনাদের মালিক সম্পাদকের কাছে একটি অনুরোধ করছি, আপনারা যা দেখবেন শুনবেন তাই লিখবেন। অতিরিক্ত কিছু লিখবেন না।’
শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় জাদুঘরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলের সমন্বয়ক (মোহাম্মদ নাসিম) গতকাল আমার সাথে কথা বলেছেন। নাট্যমঞ্চে ১৪ দল কর্মী সমাবেশ করবে। সমাবেশ না, সমাবেশ যদি হতো তাহলে আমরা নাট্যমঞ্চে কেন করব? আপনারা সেটা সমাবেশ বানিয়ে বিএনপির সঙ্গে পাল্টাপাল্টি বাণী করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল একটি টিভি টকশো দেখছিলাম। অনেক ব্যস্ততার মধ্যেও মাঝে মাঝে টিভি দেখা হয়। টকশোর বিষয়বস্তু সমাবেশ করতে পুলিশের অনুমতি কেন? এটা কিভাবে টকশোর বিষয়বস্তু হয়! সরকারি দল বা বিরোধী দল যারাই সমাবেশ করতে চায় তাদেরকেই সমাবেশের জন্য অনুমতি নিতে হয়।
শুধু বিরোধী দলকেই নয় আমরা যখন সমাবেশ করতে চাই তখনও পুলিশের অনুমতির প্রয়োজন হয়। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমরা বিরোধী দলে ছিলাম, তখনও আমাদের অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন হয়েছে। কিন্তু ওই টকশোতে যারা অতিথি ছিলেন, বিএনপি নেতা ছিলেন তিনি বিষয়টা জানেনই না, আবার আমাদের পক্ষ থেকে যিনি উপস্থিত ছিলেন তিনিও বিষয়টি ভালভাবে জানেন না। আসলে এ বিষয়ে আলোচনায় বা কেন?’
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার এক বন্ধু, একসময় ছাত্র ইউনিয়ন করেছিলেন উনি এখন বিএনপির থিঙ্কট্যাংকের সঙ্গে জড়িত। গত পরশুদিন এক টকশোতে তার বক্তব্য আমি অবাক হয়ে শুনলাম, তিনি বলেছিলেন ওবায়দুল কাদের সাহেব যে কথা বলেছেন তাতে আমরা ভয় পাচ্ছি, উদ্বিগ্ন। কারণ আমি নাকি বলেছি, দেশে অশনি সংকেত শুনতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি দেশে অশুভ শক্তির তৎপরতা চলছে, তিনি কেন অর্ধসত্য বলে আমার অশুভ শক্তির জায়গায় অশনি সংকেত ব্যবহার করে আমার সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন? এটাই যদি বিএনপির রাজনীতি হয়, আমার কিছু বলার নাই। এটা মিথ্যাচার, আমি চ্যালেঞ্জ করছি, আমার ভিডিও আছে। আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে ১০ বছরে ১০ মিনিটও তারা রাস্তায় নামতে পারে নাই। আপনাদের দাবির এত জোর, ৫০০ লোকের মিছিল দেখি নাই। আন্দোলনের ডাক দিয়ে পুলিশের গতিবিধি কড়া না নরম এ খবর নিতে যায়। এরাই হচ্ছে নেতা, এরা আন্দোলন করবে। আন্দোলনের মরাগাঙ্গে ১০ বছরে ঢেউ আসেনি এখন এক মাসে কী করে আসবে। এখন কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য আন্দোলনের নামে চিৎকার চেঁচামেচি করছে।
কাদের বলেন, রাস্তায় অবরোধ করে কোন সভা সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সবার জন্য উন্মুক্ত। সেখানে প্রয়োজনে মুক্তমঞ্চ করে দেয়ার কথাও বলেছেন, যার যা খুশি বলতে পারবেন। দরকার হলে আমরা মাইকও ফিট করে দিবো। কিন্ত রাস্তায় চেঁচামেচি করতে দিবো না, আমরাও করবো না, আপনাদেরও দিবো না।
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে জাতিসংঘের নিচের সারির কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন, এসে বলেছিলেন জাতিসংঘ নাকি তাদের পক্ষে দাঁড়াবে। গতকাল শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন বাংলাদেশে আজ যে পরিস্থিতি বিরাজমান এ জন্য শেখ হাসিনার সরকার ও জনগণের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও সহযোগিতা করবেন। এটা আমরা বিএনপির মতো বানিয়ে বলছি না, দেশ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ আছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে সবার মন খারাপ কারণ বিতর্কিত সিদ্ধান্তে আমরা ক্রিকেটে হেরে গেলাম। কিন্তু আমরা হারিনি, আমরা হারবো না। বাংলাদেশের টাইগাররা চোট খেয়েছে কিন্তু এশিয়া কাপের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কয়েকবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের সঙ্গে লড়াই করেছে। শেষ বল পর্যন্ত ঘাম ঝরানো বিজয় ভারতকে দেখতে হয়েছে।