Breaking News
Home / জীবনযাপন / ভাত খাওয়ার পর যে কাজগুলি ভুলেও করা উচিত নয়
ভাত খাওয়া

ভাত খাওয়ার পর যে কাজগুলি ভুলেও করা উচিত নয়

সারা বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ নানা ভাবে ভাত খেয়ে থাকেন। এশিয়া মহাদেশে প্রতিদিন ভাত খাওয়া লোকের সংখ্যা সবথেকে বেশি। আর বাংলাদেশ ও ভারতের কথা তো বাদই দিলাম! বাঙালি সারাদিনে একবার ভাত খাবে না, সেটা হতেই পারে না। গরম হলে তো কথাই নেই, পান্তা হলেও চলবে। ভাত অবশ্যই উপকারী খাবার। কিন্তু এমন কিছু বদ অভ্যাস রয়েছে যেগুলো আমাদেরকে সুস্থ রাখার পরিবর্তে অসুস্থ করে তোলে।

আর তাই সেসব অভ্যাস পরিত্যাগ করাই ভাল। এ অভ্যাসগুলো শরীরে নানা বিরূপ প্রভাব ফেলে।

১. খাবার খাওয়ার পরপরই অনেকে ফল খায়। এটা একদম ঠিক নয়। কারণ এতে বাড়তে পারে এসিডিটি। খাবার গ্রহণের দু’এক ঘণ্টা আগে বা পরে ফল খাওয়া ভাল।

২. অনেকে দেখা যায় খাবার শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই ধূমপান শুরু করে। এটা খুবই মারাত্মক খারাপ অভ্যাস। চিকিৎসকরা বলেন, অন্য সময় ধূমপান যতটুকু ক্ষতি করে খাবার খাওয়ার পর ধূমপান করলে তা ১০ গুণ বেশি ক্ষতিকর।

৩. খাবার গ্রহণের পর পরই গোসল করবেন না। কারণ খাওয়ার পরপরই গোসল করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে পাকস্থিলির চারপাশের রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায়। যা পরিপাকতন্ত্রকে দুর্বল করতে পারে। ফলে খাবার হজমের স্বাভাবিক সময়কে ধীরগতি করে দেয়।

৪. অনেকে দেখা যায় খাবার গ্রহণের সময় বা পরপরই কোমড়ের বেল্ট কিংবা কাপড় ঢিলা করে দেয়। এটা ঠিক নয়। কারণ কোমরের বেল্ট বা কাপড় ঢিলা করলে খুব সহজেই ইন্টেসটাইন (পাকস্থলি) থেকে রেক্টাম (মলদ্বার) পর্যন্ত খাদ্যনারীর নিম্নাংশ বেকে যেতে পারে বা পেঁচিয়ে যেতে পারে বা ব্লক হয়ে যেতে পারে। এ সমস্যাকে ইন্টেসটাইনাল অবস্ট্রাকশন বলে।

৫. খাবার পরপরই ব্যয়াম করা ঠিক নয়।

৬. ভাত খাওয়ার পরপরই ঘুমিয়ে পড়া খুবই খারাপ অভ্যাস। এর ফলে শরীরে মেদ জমে যায়।

৭. খাবার পরেই অনেকে হাতে চায়ের কাপ নিয়ে বসে যান। চায়ে থাকে প্রচুর পরিমাণ টেনিক এসিড যা খাদ্যের প্রোটিনকে ১০০ গুণ বাড়িয়ে তোলে। এতে খাবার হজম হতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে। তাই কিছু সময় অপেক্ষা করার পর চা পান করুন।

৮. হাটা চলা করবেন না! অনেকেই বলে থাকেন যে , খাবার পর ১০০ কদম হাটা মানে আয়ু ১০০ দিন বাড়িয়ে ফেলা! কিন্তু আসলে বিষয়টা পুরোপুরি সত্য নয় খাবার পর হাটা উচিত , তবে অবশ্যই সেটা খাবার শেষ করেই তাৎক্ষণিকভাবে নয় । কারণ এতে করে আমাদের শরীরের ডাইজেস্টিভ সিস্টেম খাবার থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষনে অক্ষম হয়ে পড়ে।

একথা অস্বীকার করার নয় যে ভাতের একাধিক গুণ রয়েছে। যেমন-

১. লো-ক্যালরি ফুড একটা ধারণা বেশ ভালোভাবেই প্রচলিত আছে যে, ভাত খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু অন্য আর সব খাবারের মতোই ভাত পরিমিত পরিমাণে খেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। ১০০ গ্রাম ভাতে রয়েছে প্রায় ১০০ ক্যালরি। ফ্যাটের পরিমাণও খুব কম, ভাত্র ০.৪ গ্রাম। আটার রুটির প্রায় সমান ক্যালরি। ময়দা, পরোটা বা তেলে ভাজা পুরির তুলনায় ভাত খাওয়া উপকারী। দিনে দু বার ভাত খেতেই পারেন, তবে আপনার উচ্চতা ও ওজন অনুযায়ী ভাতের পরিমাণ নির্দিষ্ট রাখুন।

২.ভিটামিনের আধার  ভাতে যথেষ্ট পরিমাণে নিয়াসিন, ভিটামিন ডি, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রন, থিয়ামিন ও রাইবোফ্লাভিন রয়েছে।

৩.সহজে হজম হয় কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার হওয়ায় ভাত সহজে হজম হয়। হজমপ্রক্রিয়ার জন্য ভাত খুব উপকারী। বিশেষ করে ডায়রিয়া হলে জাউভাত খুব ভালো কাজে দেয়।

৪. বাওয়েল মুভমেন্টের জন্য উপকারী ভাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে স্টার্চ। স্টার্চ স্বাভাবিক বাওয়েল মুভমেন্টের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া নিঃসরণে সহায়তা করে। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে বা বদহজমের সমস্যা হলে ভাত খাওয়াটাই ভালো।

৫. হাইপারটেনশনে নিরাপদ ভাতে কোলেস্টেরল ও সোডিাম নেই। হাইপারটেনশনের সমস্যা যাদের রয়েছে তারা ডায়েটে ভাত রাখার চেষ্টা করুন।

৬. গ্লুটেন মুক্ত গম, বার্লি, ওটসে এক ধরনের বিশেষ প্রোটিন রয়েছে ‘গ্লুটেন’, যা অনেকেই হজম করতে পারে না। ভাতে গ্লুটেন না থাকায় যারা গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলেন তাদের জন্য ভাত উপযোগী। এ কারণেই পেটের সমস্যার সময় জাউভাত খেলে উপকার পাওয়া যায়।

এছাড়া ভাতের আরো কিছু স্বাস্থ্যগুণ-

১. ভাতে প্রচুর পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে। সেই কার্বোহাইড্রেট শরীরে শক্তি জোগায়।

২. ভাতে থাকে অ্যামাইনো অ্যাসিড। যা পেশিবৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৩. গ্যাসের সমস্যার মোকাবিলাতেও ভাতের জুড়ি মেলা ভার।

৪. রক্তচাপ ও কিডনির সমস্যায় যারা ভুগছেন, তাদের জন্যও উপকারি সাদা ভাত।

৫. ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এটি সহায়ক।

৬. ভাতে উপস্থিত শর্করা পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

৭. ভাতে থাকে B1। যা হার্টের পাশাপাশি স্নায়ুকেও ভালো রাখে।

আরও পঠিত খবর

কান্নার উপকারিতা

কান্নার উপকারিতাগুলি জেনে নিন এখানে –

কান্না মন ও শরীর দুইয়ের জন্যই ভালো। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, কান্না পেলে তা আটকানোর প্রয়োজন নেই …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *