চলতি বছরের নভম্বেরের প্রথম সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার নির্বাচন হচ্ছে সংসদ বহাল রেখেই, যা দশম সংসদ নির্বাচনে ছিল না। নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এতে প্রতিক হিসেবে জীবন্ত প্রাণী ও প্রচারণায় কাপড়ের পোস্টার ব্যবহারে নিষেধ ছাড়া আর আর কোনো পরিবর্তনের অনুমোদন দেয়নি ইসি।
এক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি) বা সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নির্বাচনী প্রচারে আচরণবিধি কেমন হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের।
তফসিল ঘোষণার পর মন্ত্রী-এমপিদের আচরণবিধি নিয়ে কথা হয় দুই নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে। তারা বলছেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে কেউ নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না। অর্থাৎ সংসদ বহাল থাকলেও কোনো মন্ত্রী-এমপি নিজ বা অন্য এলাকায় সরকারী সুবিধা নিয়ে প্রচার চালাতে পারবেন না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ নিরাপত্তা বিধান আইন অনুযায়ী, শুধু সরকারী নিরাপত্তা ব্যবহার করে প্রচার চালাতে পারবেন বলেও জানান কমিশনাররা।
যদিও আচরণ বিধিমালার ধারা ১৪-এর ২ উপ-ধারায় বলা আছে, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তাহার নিজের বা অন্যের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারী যানবাহন, সরকারী প্রচারযন্ত্রের ব্যবহার বা অন্যবিধ সরকারি সুবিধা ভোগ করিতে পারিবেন না…।’
সরকারী সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংজ্ঞায় প্রথমেই রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ছাড়া অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মধ্যে ধারাবাহিকভাবে রয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, সরকারের মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডিপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, হুইপ, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, এমপি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘সরকারী সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কোনো প্রচার-প্রচারণা কেউ চালাতে পারবেন না। তবে বিশেষ নিরাপত্তা বিধান অনুযায়ী সরকারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রচার চালাতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী।’
আরেক নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, তফসিল ঘোষণার পর সংসদ সদস্যরা সরকারী গাড়ি, পতাকা ব্যবহার করতে পারবেন না। আর সাংসদদের জন্য আলাদা কোনো নিরাপত্তারও ব্যবস্থা নাই।
তবে টাকা খরচ করে যে কেউ পুলিশি নিরাপত্তা নিতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সুবিধার বিষয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি পাবেন না। তবে বিশেষ নিরাপত্তা বিধান আইনে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে নিরাপত্তা দেয়া হয়। এটুকু প্রধানমন্ত্রী পাবেন। এর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারী কোনো সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন না।
আচরণবিধিতে বলা আছে, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি নির্বাচন-পূর্ব সময়ে এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচন-পূর্ব সময়ে এই বিধিমালার কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।