মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। এই সময়টাতে কোরবানিকৃত পশুর মাংসের সঠিক সংরক্ষণও অত্যন্ত জরুরি। সঠিকভাবে মাংস সংরক্ষণের কৌশল না জানার কারণে অনেকসময় মাংস নষ্ট হয়ে যায়, স্বাদ নষ্ট হয়ে যায় কিংবা মাংসের গুণাগুণ বজায় থাকে না। তাই মাংস সংরক্ষণের কৌশলগুলো জানা প্রয়োজন।
মাংস প্রাণীজ প্রোটিনের অন্যতম প্রধান উৎস। কোররবানির মাংস সবাই-ই চায় একটু বেশি সময় রেখে, ধীরে ধীরে রান্না করতে।
১। মাংস সংরক্ষণের সবচেয়ে আদি পদ্ধতি হলো মাংসের টুকরো লবণ মেখে ভালোভাবে রোদে শুকানো। এ পদ্ধতিতে মাংস অনেকদিন ভালো থাকে। এজন্য মাংস টানা ৫ থেকে ৬ দিন রোদে দিতে হবে। এবং মাংস টিনে অবশ্যই ভালো করে এটেঁ রাখতে হবে। রোদ না থাকলে বা বর্ষার সময় এ পদ্ধতি পরিহার করাই শ্রেয়।
২। হাল্কা লবণ এবং হলুদ দিয়ে মাংস মেখে নিয়মিত তাপ দিলে, অনেকদিন সাধারণ তাপমাত্রায় ভালো থাকে।
৩। ভিনেগার ব্যবহার করেও মাংস ভালো রাখা যায়। এজন্য টিনের কৌটো বা বোতলের মাঝে ভিনেগারে মাংস ডুবিয়ে রাখলে অনেকদিন ভালো থাকে। এছাড়া লেবুর রসের মাধ্যমের মাংস ভালো রাখা যায়। মাংসের টুকরোগুলোতে লেবুর রস মেখে ক্যানড করতে হবে। এবং ভালোভাবে মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে। তবে ভিনেগার বা লেবুর রস সংরক্ষণের পাত্রটি ডিপ ফ্রিজে না রেখে রেফ্রিজারেটরের সাধারণ তাপমাত্রায় রাখতে হবে।
এখনকার সময় মাংস সংরক্ষণের সবচেয়ে বড় পদ্ধতি হিসেবে ধরা হয় ফ্রিজে সংরক্ষণ করা। যার মাধ্যমে মাংস অনেকদিন ভালো রাখাও সম্ভব। তবে দীর্ঘদিন ফ্রিজে মাংস রাখলে সেটি নষ্ট হয়ে যাবে। সাধারণত ফ্রিজে গরুর মাংস ৩ থেকে ৪ মাস ভালো থাকে এবং খাসির মাংস ২ থেকে ৩ মাস ভালো থাকে। ফ্রিজে মাংস রাখার কিছু পদ্ধতি জেনে নিন।
৪। কোরবানির পশুর মাংস রাখার আগে ফ্রিজ ভালোভাবে পরিষ্কার নেয়া উচিত। কেননা আগের মাছ বা অন্যান্য কিছুর গন্ধ থাকতে পারে।
৫। কোরবানির ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার মধ্যে মাংস শক্ত থাকে। এ সময় মাংস ফ্রিজে না রাখাই উত্তম।
৬। ফ্রিজে মাংস রাখার আগে মাংস ভালোভাবে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। যাতে রক্ত না থাকে। পানি ঝরানোর জন্যে বড় ঝুড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭। ফ্রিজে রাখা মাংসের টুকরো যেন বড় না হয় এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। এর জন্যে মাংস কাটার সময় ছোট করে কাটলে ভালো।
৮। মাংস রাখার জন্যে যেন তেন প্যাকেট ব্যবহার না করে ভালো দেখে প্যাকেট ব্যবহার করাই উত্তম। তাতে মাংস ভালো থাকে।
৯। অনেক সময় দেখা যায় পাশাপাশি অনেকগুলো মাংসের প্যাকেট রাখার ফলে প্রয়োজনের সময় মাংস নেয়া যাচ্ছে না। একটি প্যাকেটের সঙ্গে অন্যটি লেগে আছে। এজন্য প্রথমেই ফ্রিজে রাখার সময় প্যাকেটগুলোর মাঝে মোটা কাগজের টুকরো রাখা যেতে পারে। তাহলে এ সমস্যা দেখা দেবে না।
১০। ফ্রিজের দরজা প্রয়োজন ছাড়া বেশি না খোলা। এতে মাংসের প্যাকেটে বাতাস লাগতে পারে। রান্না করা মাংস ছোট বাক্সে সংরক্ষণ করা এবং বেশিদিন ফ্রিজে না রাখা। এতে গুণাগুণ ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।