কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের মেহের ঘোনা রেন্জের চাঁন্দের ঘোনা এলাকায় বন দস্যুদের হালায় ফরেষ্টার মামুন সহ পাঁচ জন বন প্রহরী আহত হয়েছেন। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শুক্রবার (১৭ আগষ্ট) সকাল ১১টার দিকে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের আওতাধীন ঈদগাঁও চাঁন্দের ঘোনা উছিন্নামুরা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
শুক্রবার সকালে মেহেরঘোনা রেন্জের বনপহরীও বন দস্যুদেরসাথে গুলাগোলির ঘটনায় তারা আহত হয়েছে।
জানা যায় বনদস্যুরা বন বিভাগের জায়াগায় অবৈধ ঘর বাড়ী নির্মাণ করতে ছিল সংবাদ পেয়ে তাদেরকে বন প্রহরীরা বাঁধা দিলে এই ঘটনা ঘটেছে।
এতে অন্ততপক্ষে পাঁচজন বনপ্রহরী বন দস্যুদের গুলিতে গুরুতর আহত হয় বলে রেন্জকর্মকর্তা আতা এলাহি জানান। এ ঘটনায় বনকর্তার গুলিতে মোস্তাক আহমদ (৩৪) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছে বলে জানা গেছে।
নিহত ব্যক্তি ওই এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোছেনের ছেলে। গুলিবিদ্ধ ও আহতদের মধ্যে বনবিট কর্মকর্তা মামুনর রশিদ খাঁন, বনপ্রহরী আবদুল মান্নান, আবদুল মতিন, শহিদুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ ছবুর আলী, আবদু রশিদ, কাজী আবদুল মালেক, সমির চন্দ্র কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক হয়নি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোস্তাক আহমদসহ ৪/৫ জন লোক রিজার্ভ জমিতে পলিথিন দিয়ে ঝুঁপড়ি ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে ঈদগাঁও মেহের ঘোনা বিট কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ খাঁনের নেতৃত্বে একদল বন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌছে ঝুঁপড়ি নির্মাণে বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ঘর নির্মাণকারী মোস্তাককে লক্ষ করে গুলি ছুঁড়ে বিট কর্মকর্তা মামুন। মোস্তাককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে বনকর্মীদের ধাওয়া করে উত্তেজিত জনতা। এতে এলাকাবাসী ও বন কর্মকর্তাদের সাথে ২য় দফা সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে বিট অফিসের ৭জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আহত হয়।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তিনি জানান, নিহতের গলা, হাতে ও বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে। লাশের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরী করে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিট অফিস ও নিহত ব্যক্তির এলাকা পাশাপাশি হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কক্সবাজার উত্তন বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা (স্পেশাল ওসি) মেহেদী হাসান জানান, একদল সশস্ত্র বনদস্যু শুক্রবার সকালে মেহেরঘোনা বনবিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কাঠ কাটছিল। সংবাদ পেয়ে মেহেরঘোনা বনবিটের একদল বনকর্মী ঘটনাস্থলে পৌছেন। এসময় সশস্ত্র বনদস্যুরা বনকর্মীদের লক্ষ করে গুলি ছুঁড়ে। ধারালো দা দিয়ে বনকর্মীদের এলোপাতাড়ি কুপায়। জবাবে বনকর্মীরাও গুলি চালায়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই ৯ জন বনকর্মী গুলিবিদ্ধ ও দায়ের কুপে আহত হন। আহত ৭ বনকর্মীদের উদ্ধার করা হলেও ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হক মাহবুব মোর্শেদ জানান, গুলিবিদ্ধ ও দায়ের কুপে আহত বনকর্মীদেরকে আশংকা জনক অবস্থায় কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। তিনি জানান, এখনো ২ জন বন প্রহরী নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে আহতদের দেখতে জেলা সদর হাসপাতালে ছুটে যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভা মেয়র মুজিবুর রহমান।তিনি আহতদের খোঁজ খবর নেন।