PhD এর মানে ডক্টর অফ ফিলসফি। কিন্তু ফিলসফি মানে তো দর্শন। মানে দর্শন শাস্ত্র ! তাহলে কি সবাই দর্শন শাস্ত্র নিয়েই গবেষণা করে! কিন্তু না, একেকজন তো একেক বিষয়ে পিএইচডি করে! কিভাবে?
আসলেই এটা একটা দর্শন তবে বিষয়টা শুধু দর্শন না। এটার পিছনে একটা মজার ব্যাপার আছে। ব্যাখ্যা করা যাক- এখানে এই ফিলসফি শব্দটা ব্যাপক অর্থে ব্যাবহার হয়েছে। গ্রিক ভাষায় ফিলসফি মানে সোজা বুঝায়ঃ ‘Love of wisdom’ বা তাঁদের কাছে বিষয়টা হচ্ছে ‘জীবনের মানে জানার’ আগ্রহ। জ্ঞানের আলোকে সিদ্ধান্তে পৌঁছার প্রজ্ঞা। ইউরোপে জ্ঞানের সব সেক্টরকেই তাঁরা ফিলসফির বা দর্শনের আওতায় চিন্তা করত। তাই তাঁরা সব কিছুর মধ্যেই ফিলসফি খুঁজত।
সবচেয়ে মজার ব্যাপারটি হচ্ছে এই পিএইচডি একসময় মাস্টার্স পাশের সমানই ছিল। নামে ভিন্ন হলেও মান একই ছিল। সম্ভবত সর্বপ্রথম পিএইচডি এওয়ার্ডে ভূষিত করা হয় ১১৫০ সালে, প্যারিসে। তখন মেডিয়াভাল যুগ ছিল, তখন ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানির সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একই সুতায় গাঁথা ছিল। অর্থাৎ ইউরোপের দেশগুলোর নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একটা ক্লাস্টার আকারে ছিল। উনবিংশ শতাব্দীতে এসে এই ডিগ্রির মান বাড়ে এবং তা স্বতন্ত্র হিসেবে ভীত লাভ করে। তবে এই ডিগ্রির ব্রান্ডিং এর পিছনে অবদান জার্মানিরই বলতে হবে।
১৬৫২ সালের আগে কোন জার্মান পিএইচডি অর্জন করে নি। ১৮১০ সালের পর জার্মান পরাশুনা ও কারিকুলামে পরিবর্তন আসে। পরিবর্তন আসে তাঁদের শিক্ষা ব্যাবস্থায়ও। উনিশ শতকের মাঝামাঝি তাঁরা বিদেশি ছাত্রদের আকর্ষণ করার জন্য এই ডিগ্রিকে অগ্রাধিকার দেয়। জার্মানির টার্গেট ছিল অ্যামেরিকার ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের দেশে আসবে ও পড়াশুনা করবে এবং ভাল গবেষণা করবে আখেরে তাঁদেরই লাভ। আসলে হয়েছিলও তাই! দলে দলে আমেরিকান ছাত্ররা চলে এল এই দেশে। তখন অ্যামেরিকার কলেজে ব্যাচেলর শেষ করেই তাঁরা পিএইচডি পড়তে চলে আসত জার্মানিতে। এটা আমেরিকানদের এতটাই চিন্তিত করেছে যে তাঁরা অবশেষে পিএইচডি প্রোগ্রাম খুলতে বাধ্য হল। আর তখনি শুরু হয় পুরোদমে থিসিস লিখা ও জমা দেয়া। পরে এই ডিগ্রি ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও চালু হল এবং ভিন্ন ভিন্ন ফ্যাকাল্টির নামে দেয়া শুরু হল। মাস্টার্সের এর উপরে উঠল এবং সর্বোচ্চ ডিগ্রি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল। আর এখন আমেরিকা সবচেয়ে বেশি পিএইচডি হোল্ডার সাপ্লাই দেয়, আর জার্মানি ২য়।
(ভাষান্তরিত ও পরিমার্জিত)
Collected