ঈদের নামায বছরে পড়তে হয় বৎসরে মাত্র দুইবার, ফলে অনেকেই এর নিয়মকানুন একটু গুলিয়ে ফেলেন। অনেকেই কখন হাত বাঁধবেন, কখন হাত না বেঁধে ছেড়ে দেবেন এটা নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন, এমনকি অনেকে একবার ডানপাশের লোকেরটা অনুসরণ করেন আরেকবার বামপাশের লোকেরটা অনুসরণ করেন। অথচ বিষয়টা খুবই সহজ।
ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত:
নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল ঈদিল্ ফিত্রি মা’আ সিত্তাতি তাক্বীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা ইক্তাদাইতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর।
অর্থ:
আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহ্র (সন্তুষ্টির) জন্য অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের দুই রাকআত ওয়াজিব নামাজ এই ইমামের পিছনে আদায়ের নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবর।
ঈদুল আযহা নামাযের নিয়তঃ
নাওয়াইতুআন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআলা রাকআতাই ছালাতিল ঈদিল আযহা মাআ ছিত্তাতি তাকবিরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
বাংলা নিয়ত: আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে ছয় তাকবীরের সাথে ঈদুল আযহার দু’ রাকআত ওয়াজিব নামায পড়তেছি আল্লাহু আকবার।
নামাযের শুরুতে আমরা যে তাকবির দেই (আল্লাহু আকবার বলি) তাকে তাকবিরে তাহরিমা বা প্রথম তাকবির বলা হয়। যে কোন নামাযে এই তাকবির দেওয়া ফরয। ঈদের নামযে এই তাকবির এবং অন্যান্য সাধারণ তাকবিরের সাথে অতিরিক্ত ৬টি তাকবির দিতে হয়।
প্রথম রাকাতে অতিরিক্ত ৩ তাকবির (ছানা পড়ার পর)
দ্বিতীয় রাকাতে অতিরিক্ত ৩ তাকবির (সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা পড়ার পর)
মনে রাখার বিষয় হলো:
১. যে তাকবিরের পরে সূরা/ছানা পড়তে হয় সেই তাকবিরের পর হাত বাঁধতে হয়।
২. যে তাকবিরের পরে সূরা/ছানা পড়তে হয় না, সেই তাকবিরের পর হাত বাঁধতে হয় না।
এই দুইটা বিষয় মনে রাখলে হাত বাঁধা বা ছাড়া নিয়ে কোন সমস্যা আর থাকবে না। আসুন একটু বিস্তারিতভাবে দেখি:
১ম রাকাত ->
- তাকবিরে তাহরিমা (১ম তাকবির)।
- হাত বাঁধা (কারণ এর পর ছানা পড়তে হবে)।
- ছানা পড়া।
- ১ম অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
- হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
- ২য় অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
- হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
- ৩য় অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
- হাত বেঁধে ফেলা (কারণ এর পর সূরা পড়া হবে)।
- সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা মিলানো।
- তাকবির দেওয়া।
- রুকু করা।
- রুকু থেকে দাঁড়ানো।
- সিজদায় যাওয়া।
- ২টি সিজদা করা।
- তাকবির দেওয়া (২য় রাকাতের জন্য)।
২য় রাকাত ->
- হাত বেঁধে দাঁড়ানো।
- সূরা ফাতিহা + অন্য সূরা মিলানো।
- ৪র্থ অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
- হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
- ৫ম অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
- হাত ছেড়ে দেওয়া (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না)।
- ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত তাকবির দেওয়া।
- হাত না বাঁধা (কেননা এরপরে তো আর কোন সূরা পড়া হচ্ছে না, রুকুতে যেতে হচ্ছে)।
- রুকু করা।
- রুকু থেকে দাঁড়ানো।
- সিজদায় যাওয়া।
- ২টি সিজদা করা।
- শেষ বৈঠক + সালাম ফিরানো।
এই ছবিতেও ভালভাবে দেখে নিনঃ