Breaking News
Home / জীবনযাপন / কান্নার উপকারিতাগুলি জেনে নিন এখানে –
কান্নার উপকারিতা
কান্নার উপকারিতা

কান্নার উপকারিতাগুলি জেনে নিন এখানে –

কান্না মন ও শরীর দুইয়ের জন্যই ভালো। মনোবিদরা জানাচ্ছেন, কান্না পেলে তা আটকানোর প্রয়োজন নেই বরং কেঁদে নেওয়াই ভালো। এ লেখায় থাকছে কান্নার কয়েকটি উপকারিতা।

১. চোখ পরিষ্কার করে
কান্নার সময় চোখের পানি আমাদের চোখের মণি আর চোখের পাতা ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে দেয়। এটি আমাদের চোখকে পানিশূন্যতা থেকেও বাঁচায়। ফলে চোখ পরিষ্কার রাখতে আর দৃষ্টি পরিষ্কার করতে সাহায্য করে কান্না।

২. ব্যাকটেরিয়া দূর করে
চোখের পানিতে থাকে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দূর করার উপাদান। রাস্তা-ঘাটে, বাসে-ট্রামের ধুলো-বালি থেকে সারা দিনে চোখের ভেতর কত ময়লাই না জমা হয়। এগুলো থেকে নানা জীবাণু আমাদের চোখের বাসা বাঁধতে পারে। কিন্তু চোখের পানি এসব ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের জীবাণু ধ্বংসে খুবই কার্যকর। চোখের পানিতে থাকা আইসোজাইম মাত্র ৫-১০ মিনিটেই চোখের প্রায় ৯০-৯৫ ভাগ ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে পারে।

৩. মন উদ্দীপ্ত করে
কান্নায় মন ভালো হয়। কারণ কান্নায় শরীরে ম্যাঙ্গানিজের মাত্রা কমে যায়। এই ম্যাঙ্গানিজ বেশি মাত্রায় জমতে থাকলে উদ্বেগ, অস্বস্তি, রাগ-ক্ষোভ বেড়ে যাওয়াসহ নানা আবেগি ঝামেলা তৈরি করতে থাকে। কিন্তু কেঁদে ফেলতে পারলে এর মাত্রা কমে গিয়ে শরীর ও মন হালকা হয়।

৪. মানসিক চাপ কমায়
কান্নাতে আমাদের মনের ওপর চাপ কমে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে আমাদের শরীরে ‘লিওসিন এনকেফেলিন ও প্রোলাকটিন’-এর মতো কিছু রাসায়নিক জমা হয়। আবার কান্নার অবদমন আমাদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার চাপ আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু কাঁদতে পারলে এই সব অতিরিক্ত চাপ কমে যায়।

৫. আবেগজনিত চিকিৎসা
কান্না বাস্তবে একটা চিকিৎসার মতো। এটা উদ্বেগ কাটায়, বিষণ্নতা দূর করে। আবেগে কেঁদে ফেলতে পারাটা বহু কারণেই মন ও দেহের জন্য উপকারী। দীর্ঘদিন ধরে আবেগ চেপে রাখা ক্ষতিকর। এতে মনের ভেতর জমে ওঠে নানামুখী চাপ। এটি মস্তিষ্কেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। আর এ পরিস্থিতি সামলাতে প্রয়োজন কান্না।

 

দুঃখবোধের নিজস্ব একটি রুপ আছে। দুঃখবোধ যখন সম্পূর্ণ রূপে প্রকাশিত হয় তখন তাকে বিচ্ছিন্ন বলে মনে হয়। দুঃখবোধের বাহ্যিক প্রকাশ কান্নার মাধ্যমে হয় যাকে দুর্বলতা ও নিরাপত্তাহীনতার লক্ষণ বলে মনে হয়। কিন্তু এই ধারণাটি আসলে ঠিক নয়। বস্তুত যারা তাদের দুঃখের আবেগকে প্রকাশ করতে ভয় পায় না তারাই আসলে মানসিকভাবে শক্তিশালী, যারা এই ধরনের আবেগকে লুকিয়ে রাখে তাদের তুলনায়। কেন তা জেনে নিই চলুন।

১। তারা তাদের আবেগ প্রকাশ করতে ভয় পায় না

আপনি যখন আনন্দে উদ্বেলিত হন তখন কী আপনার হাসি লুকিয়ে রাখেন? রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় যখন রাস্তায় কোন নোংরা দেখেন তখন কী আপনি মুখ বিকৃত করেন না? তাই আপনি যদি দুঃখ পান তাহলে কাঁদবেন না কেন? যারা নিজের দুঃখবোধকে উপেক্ষা করেন তারা নিজেদেরকেই ধোঁকা দেন। কান্না দুর্বলতার লক্ষণ নয়। আপনি যে মানুষ এবং আপনার অনুভূতি আছে তাকেই নির্দেশ করে কান্না।

২। অশ্রুর নিরাময় ক্ষমতার বিষয়টি তারা জানেন

মানুষ যখন কাঁদে তখন অশ্রুর সাথে সাথে তার শরীর ও মস্তিষ্ক থেকে স্ট্রেস, উদ্বিগ্নতা, অনুশোচনা ও হতাশা বের হয়ে যায়। কান্না আত্মাকে পরিষ্কার করে, মনকে সমৃদ্ধ করে এবং স্ট্রেসের ফলে সৃষ্ট নেতিবাচক আবেগকে দূর করতে সাহায্য করে। চূড়ান্ত আবেগকে শরীরের মধ্যে লুকিয়ে রাখা শারীরিক ও মানসিক উভয় দিকেই বিপদজনক। অশ্রুর বৈজ্ঞানিক উপকারিতা আছে কারণ এর মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়ে যায়, দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে।

৩। কান্নার স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আছে

সাম্প্রতিক মনস্তাত্ত্বিক গবেষণায় নির্ধারণ করা হয়েছে যে, কান্না আমাদের মস্তিষ্কের এন্ডোরফিনের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করতে পারে, যা একটি ভালো অনুভব করার হরমোন এবং প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। কান্নার ফলে ম্যাঙ্গানিজের মাত্রা কমে। এই রাসায়নিকের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে শরীর এবং মন ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠতে পারে। কান্নার ফলে খারাপ অনুভূতি থেকে মুক্ত হওয়া যায় তা এক মুহূর্তের জন্য হলেও। এর ফলে সমস্যাটির বিষয়ে পরিষ্কারভাবে চিন্তা করা যায়।

৪। তারা লিঙ্গের ভূমিকা বা সামাজিক প্রত্যাশা নিয়ে চিন্তিত হয় না

যখন একটি মেয়ে কাঁদে তখন মনে করা হয় যে সে অস্থির বা অন্যের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য কাঁদছে। যখন একটি ছেলে কাঁদে তখন মনে করা হয় যে, সে দুর্বল এবং তার মধ্যে পুরুষালীভাব কম আছে। এই সরলীকরণের ফলেই নারী পুরুষ উভয়কেই তাদের দুঃখবোধের আবেগকে মনের গভীরে লুকিয়ে রাখতে উৎসাহিত করে। তাই যারা মানুষের সামনে তাদের দুঃখের আবেগকে প্রকাশ করতে পারে তারা শুধু সাহসীই নয় তারা স্বাস্থ্যকর সমাজের একজন কর্মীও বটে।

কান্নার জৈবিক ক্ষমতাটির বিষয়ে উপলব্ধি করা উচিৎ আমাদের সবার এবং এর প্রাকৃতিক উদ্বিগ্নতা মুক্তির উপকারিতা লাভ করা উচিৎ। কারণ কান্না দুর্বলতার লক্ষণ নয় বরং অভ্যন্তরীণ শক্তির প্রতীক।

আরও পঠিত খবর

জীবনে সাফল্য পাওয়ার জন্য যে ৩টি জিনিস সবচেয়ে দরকারি

জীবনে চলার বাঁকে আমরা কখনো না কখনো হতাশায় ভুগি। কখনো কাজের চাপে, কখনো চাকরি না …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *