নির্বাচন কমিশন নিজেরাই বিভক্ত হয়ে পড়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,‘নির্বাচন কমিশনে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, এই সঙ্কট আজ রাষ্ট্রের। তাই বিভক্ত নির্বাচন কমিশন দিয়ে দেশে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
শনিবার (২০অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টর্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) আয়োজিত ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ফরমায়েশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল কর’ শীর্ষক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আজকে বিভক্ত, তারা (নির্বাচন কমিশন) এখন ভিন্ন কথা বলছে। সেখানে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। একজন কমিশনার যে প্রস্তাব দিয়েছেন সেই প্রস্তাবকে অন্য কমিশনার বলছে অসাংবিধানিক। নির্বাচন কমিশন নিজেরাই বিভক্ত হয়ে পড়েছে। তাই বিভক্ত নির্বাচন কমিশন দিয়ে দেশে কোন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন,‘জোর করে একটা দলকে ক্ষমতায় বসাতে, সকল প্রকার আইন কানুন করে ২০১৪ সালের আরেকটা নির্বাচন করতে যাচ্ছে সরকার। নির্বাচন কমিশনে নিজস্ব কোন ক্ষমতা নেই। তাদের পুরোটাই নির্ভর করতে হয় সরকারের কর্মকর্তা এবং সরকারের ওপরে। নির্বাচন কমিশনের সচিবের কথায় মনে হয়, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশন, আর প্রধান নির্বাচন কমিশনের কথা শুনে মনে হয়, সব চেয়ে অসহায় ব্যক্তি। তিনি কিছুটা এরশাদ সাহেবের মতো সকালে এক কথা বলেন, বিকেলে এক কথা বলেন।’
সাবেক এই প্রতি মন্ত্রী বলেন, ‘এদেশের মানুষকে বোকা ভাববেন না। সব সময় নীরব ভাববেন না। কারণ এ দেশের মানুষ বারবার নিজেদের প্রয়োজনে রাস্তায় নেমে এসেছে। আবারো রাস্তায় নামবে। আমরা বলেছি আমরা একটা পরিবর্তন চাই। তাই বলছি দয়া করে সিধা রাস্তায় আসুন, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন, তার সাথে আলাপ করুন, বিরোধী দলের সাথে আলাপ করুন এবং দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন কিভাবে হবে তার পথ বের করুন। এছাড়া অন্য কোন পথ নেই বিকল্প নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ২৩ অক্টোবর একটা সমাবেশ করতে যাচ্ছিল, সরকার বলছে নাশকতা হবে, দেওয়া যাবে না। অথচ চরমোনাই পীর সাহেবকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরশাদ সাহেবকে সরকারি টাকায় ঢাকা অচল করে সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।’
খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ কারাগার থেকে বেগম জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানেও নূন্যতম চিকিৎসা তিনি পাচ্ছেন না।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলার সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। বহু নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অনেকেই ইতোমধ্যে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। এভাবে একটি দলের ওপর নির্যাতন করলে কীভাবে সুষ্ঠু রাজনীতি হয়। নির্বাচনই বা কিভাবে সুষ্ঠু হবে।’
সংগঠনের সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মো. আনোয়ার, যুবদলনেতা কাদেরর সিদ্দিকী প্রমুখ বক্তব্য দেন।