প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কারো মুখাপেক্ষী হয়ে রাজনীতি করি না। আমার বড় শক্তি হচ্ছে আমার দেশের জনগণ। দেশের মানুষ আমাকে চায় কি না? দেশের মানুষ আমাকে ভোট দেবে কিনা? আমি সেটাই বিচার করি। পরমুখাপেক্ষী হয়ে ক্ষমতায় আসার কোনও আকাঙ্ক্ষা আমার নেই।’
বুধবার (০৩ অক্টোবর) বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বিএনপি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে অনুরেধা করে আসছেন যাতে আমাকে সমর্থন দেয়া না হয়। কে সমর্থন করবে, কে করবে না এটা বিবেচ্য বিষয় নয়। কারো সহযোগিতা নিয়ে ক্ষমতায় থাকার দরকার নেই আমার।’
তিনি বলেন, ‘পরমুখাপেক্ষী হয়ে ক্ষমতায় আসার আকাঙ্ক্ষা থাকলে ২০০১ সালে দেশের সম্পদ গ্যাস বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে পারতাম। দেশের মানুষ আমায় না চাইলে, বাইরের কেউ ক্ষমতায় বসাবে আমি ওই রাজনীতি করি না।’
সংবাদ সম্মেলনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চাইলে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি কিন্তু ইভিএমের পক্ষে। জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। ডিজিটাল বাংলাদেশে টাকা যদি মোবাইলে পাঠাতে পারেন তাহলে ইভিএমে ভোট দিতে পারবেন না কেন। আমার তো মনে হয়- এমন ব্যবস্থা করা উচিত যাতে ভোটাররা মোবাইলেই ভোট দিতে পারেন। কেন্দ্রেও যাওয়া লাগবে না।’
বিএনপির সমাবেশ থেকে বলা হয়েছে আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে প্রয়োজনে শয়তানের সঙ্গেও জোট করা হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘যারা শয়তানের সান্নিধ্য ও সহযোগিতা চায় দেশবাসী কি তাদের সমর্থন দেবে। আমার তো মনে হয় না। কেউ কি শয়তানকে সমর্থন দেয়। দেশবাসী কি এদের সমর্থন দিতে প্রস্তুত?’
আগামীতে কোনও ষড়যন্ত্র আছে কি না এবং কেমন ষড়যন্ত্র মনে করছেন- জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ষড়যন্ত্রের একটি উর্বর ভূমি। এখানে সব সময় ষড়যন্ত্র হয়েছে। গত সাড়ে ৯ বছর আমরা ক্ষমতায়। অনেক উন্নয়ন করেছি। কিন্তু এমন কী করেছি যে কারণে আমাদের রিজাইন দিতে হবে, ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে হবে?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা চিন্তা করে সরকার পড়ে যাবে, সরকার উৎখাত হবে আর তারা ক্ষমতায় আসবে, তারা সব সময় ষড়যন্ত্র করবেই। যাদের ব্যক্তিস্বার্থ আর নিজেদের আকাঙ্ক্ষা আছে তাদের একটি ষড়যন্ত্র ছিলো, আছে, থাকবে। সেই জন্য দলের নেতাকর্মীদের সবাইকে সর্তক থাকতে বলেছি।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বনেতারা কোনও পরামর্শ দিয়েছেন কিনা- এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পরামর্শ নয়, তারা উৎসাহ দিয়েছেন। পুনরায় ক্ষমতায় আসার কথাও বলেছেন। সবাই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, যেন আমি আবারও ক্ষমতায় আসি। আমি তো আর তাদের বলতে পারি না যে, তাহলে আমাকে ক্ষমতার মসনদে বসিয়ে দিন। আমার আগেও জনগণ পিছেও জনগণ। জনগণ ভোট দিলে আছি না দিলে নেই।’