Breaking News
Home / রাজনীতি / ইভিএম এবং সুপ্রীম কোর্ট আমাদের আবার ক্ষমতায় নিয়ে আসবে ইনশাল্লাহ
Bangladesh’s Prime Minister Sheikh Hasina

ইভিএম এবং সুপ্রীম কোর্ট আমাদের আবার ক্ষমতায় নিয়ে আসবে ইনশাল্লাহ

আওয়ামী লীগ এর বিভিন্ন গোপন সূত্রে এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিভিন্ন বক্তব্য বিশ্লেষণে একটা বিষয় পরিষ্কার যে – পুনরায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে এবং এখানে সাধারণ জনগণকে ধোঁকা দেয়ার উপায় হিসেবে ইভিএম কেনা হয়েছে। পাশাপাশি পুরো নির্বাচনের ফলাফল সুপ্রীম কোর্ট দ্বারাও প্রভাবিত হবে। কারণগুলি নিম্নে আলোচনা করা হয়েছে।

গত জুলাই থেকে হাজার কোটি টাকার ইভিএম কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। যদিও বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে। দেড় লাখ ইভিএম কেনার জন্য ৩ হাজার ৮২৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসি। প্রতিটি ইভিএম ক্রয়ে ব্যয় হচ্ছে দুই লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৩ টাকা।  সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইসিকে ইভিএম সরবরাহ করবে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। ‘নির্বাচন-ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ক্রয়, সংরক্ষণ ও ব্যবহার’ শীর্ষক একটি পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্পের অধীনে দেড় লাখ ইভিএম সংগ্রহ করতে চায় ইসি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইভিএম আমদানিতে নন ফান্ডেড সুবিধা দেবে ট্রাস্ট ব্যাংক। এ জন্য বিশেষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ইভিএম-এ ভোট জালিয়াতি ও ভোট চুরির অফুরন্ত সুযোগ থাকবে বলেই বাংলাদেশের অবৈধ সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে ইভিএম ব্যবহারে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোটারবিহীন সরকারের দিক থেকে ভোটাররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলেই এখন ডিজিটাল মেশিন কারচুপির ওপর নির্ভর করছে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী।

উদাহরণস্বরূপঃ ভারতের উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে বিজেপি। তবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এনে এ রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী বলেছেন, এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করবেন তিনি। এমনকি আদালতে যাওয়ারও হুমকি দিয়েছেন মায়াবতী। মায়াবতী বলেছেন, নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত রাখতে তিনি আদালতে যাবেন। সাধারণ ভোটাররা ইভিএমে বিশ্বাস করেন না।

প্রশ্ন হলঃ 

ইভিএম কীভাবে কাজ করে?

ভোট গ্রহণের স্থান হিসেবে ভোট কেন্দ্রেই মূলতঃ ইভিএম ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ইন্টারনেট, ব্যক্তিগত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, টেলিফোন ব্যবহার করেও ই-ভোটিং প্রয়োগ করা সম্ভবপর। নতুনতর অপটিক্যাল স্ক্যান ভোটিং পদ্ধতিতে পাঞ্চ কার্ড, অপটিক্যাল স্ক্যানার ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে একজন ভোটার নির্বাচনী-পত্রী বা ব্যালট পেপারকে চিহ্নিত করে ভোট প্রদান করে।

অন্যদিকে ডিআরই ভোটিং পদ্ধতিতে একটিমাত্র মেশিনের সাহায্যে ভোট সংগ্রহ ও গণনা কার্যক্রমে ব্যবহার করা হয়। ব্রাজিল এবং ভারতে সকল ভোটার সকল ধরনের নির্বাচনে ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়াও ভেনেজুয়েলা এবং যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে ডিআরই ভোটিং পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে।

একটি নির্বাচন কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে থাকে ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিট। এই ইউনিটের সম্মুখভাগে থাকে ডিজিটাল ডিসপ্লে। বিপরীত দিকে থাকে স্টার্ট সুইচ, ব্যালট নামক সুইচ, মেমোরী রিসেট সুইচ, ফাইনাল রেজাল্ট সুইচ এবং ক্লোজ বাটনসহ আরো কিছু সুইচ। ভোট শুরু করার জন্য স্টার্ট সুইচটি চাপতে হয়।

তারপর ব্যালট সুইচটি চেপে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ভোটারকে ভোট দিতে বুথে পাঠান। এই সুইচটি চাপলে বুথের মধ্যে থাকা ইভিএমের অপর অংশ ব্যালট ইউনিটটি একটি ভোট দেয়ার জন্য কার্যকর হয়। ভোট দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার অকার্যকর হয়ে যায় ব্যালট ইউনিটটি।

যতক্ষণ না আবার কন্ট্রোল ইউনিটের ব্যালট সুইচ চাপা হচ্ছে। ভোটদান শেষে ভোটার বেরিয়ে গেলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার আবার ব্যালট সুইচ চেপে ব্যালট ইউনিটটি কার্যকর করেন। এভাবে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হলে ক্লোজ সুইচটি চাপলেই ভোটগ্রহণ কার্যক্রম পাকাপাকিভাবে বন্ধ হয়ে যাবে এবং ফাইনাল রেজাল্ট সুইচটি কার্যকর হবে।

এটি এক এক করে চেপে চললে ব্যালট ইউনিটে সাজানো ক্রমানুযায়ী একের পর এক প্রার্থীদের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা বেরিয়ে আসে। ইভিএমের অপর অংশ ব্যালট ইউনিটটি রাখা হয় বুথের ভেতর। ভোটার ঢুকে দেখবেন ব্যালট ইউনিটের নিচের দিকে একটি সবুজ বাতি জ্বলছে।

অর্থাৎ আপনার ভোট দিন। ব্যালট ইউনিটের ওপর প্রার্থীর নাম ও প্রতীক সাজানো থাকে। প্রত্যেক প্রতীকের পাশে থাকে একটি করে সুইচ। ভোটার তার পছন্দের প্রতীকটির পাশের সুইচটি চাপবেন। ভোটটি গৃহীত হলে ভোটার ব্যালট ইউনিটের নিচের দিকে থাকা লাল বাতিটি জ্বলতে দেখবেন।

অর্থাৎ ভোটটি গৃহীত হয়েছে। নতুন ভোটটি গৃহীত হলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের সামনে রাখা কন্ট্রোল ইউনিটের সামনের ডিসপ্লেতে একটি ভোট যোগ হবে। এরপর তিনি আবার অন্য কাউকে ভোটদানের অনুমতি দিয়ে বুথে পাঠালে ভোটার গিয়ে ব্যালট ইউনিটে সবুজ বাতি জ্বলতে দেখবেন। এভাবেই চলতে থাকবে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া।

কিন্তু ইভিএম ব্যবহারে ব্যাপক সমস্যা আছে। কারনঃ

ইভিএমের ৭টি খারাপ দিক

আধুনিক প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়া হলেও ইভিএম নিয়ে রয়েছে অনেক অভিযোগ। যেমন- ১। কথায় আছে জোর যার মুল্লুক তার। অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের দ্বারা কেন্দ্র দখলের পর পোলিং এজেন্টদের নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে সর্বাধিক সংখ্যক ভোট শক্তির মালিক হবে প্রভাবশালীমহল।

২। বরাবরই শোনা যায় যে নির্বাচন কমিশনে দলীয় লোক ঢুকে পড়ে। এমনটা ঘটলে তাদের কেউ যদি প্রতি কেন্দ্রে অন্তত একটি করে মেশিনে এ প্রোগ্রাম করে দেন যে, নির্বাচন শেষে ক্লোজ বাটনে ক্লিক করলেই যেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট কোনো প্রতীকে অতিরিক্ত ২০০/৩০০ ভোট যুক্ত হবে তাহলে সহজেই নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেয়া সম্ভব।

৩। দুই নং প্রক্রিয়ায় মাইক্রোকন্ট্রোলারের প্রোগ্রাম পরিবর্তনের সুযোগ হলে কোন কেন্দ্রে সকল প্রার্থী একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক (২০ বা ৫০ বা ১০০) ভোট পাবার পর যে কোন ব্যালট বাটনে চাপলেই অতিরিক্ত ভোট দখলকারী প্রার্থীর প্রতীকে যুক্ত হবে, এমন প্রোগ্রামও লিখে ব্যালট ছিনতাই সম্ভব।

৪। যদি নির্বাচনী কর্মকর্তার স্মার্ট কার্ডের নকল কার্ড তৈরি করা হয় এবং তা যদি ইভিএমের প্রোগ্রামকে বিভ্রান্ত করে একবারে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট কাস্ট করে দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন হয় তাহলে তা নির্বাচনের ফলাফলকে সম্পূর্ণরূপে পাল্টে দিবে।

৫। গোপনে যে ইভিএম সরবরাহ করা হবে না এমন নিশ্চয়তা অন্তত বাংলাদেশে আশা করা যায় না। ইভিএমের প্রতিটি ইউনিট চালু অবস্থায় পৃথক করা যায়। প্রভাবশালীদের দ্বারা কেন্দ্র দখলের পর গোপনে সরবরাহকৃত অগ্রিম ভোট দেয়া ইভিএমের শুধুমাত্র কন্ট্রোল ইউনিট প্রতিস্থাপন করলেই চলবে। ফলাফল শতভাগ অনুকূলে।

৬। মাইক্রোকন্ট্রোলার চিপ নিয়ন্ত্রিত এই ইভিএমের প্রতিটি স্মার্টকার্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে আরএফআইডি (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন) ট্যাগ। অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতা পেলে কোন প্রার্থীর কর্মীরা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে কয়েকশ মিটার দূর থেকেও কন্ট্রোল ইউনিট নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে।

৭। বাংলাদেশের ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনটি ভারতের মেশিনগুলোর কাছাকাছি মানের। ২০১০ সালের ১২ আগস্ট ‘ভারতের ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন জালিয়াতি প্রতিরোধক নয়’ দাবি করে একদল মার্কিন আইটি বিশেষজ্ঞ বক্তব্য রাখে। তারা বলেন, ‘ভারতের ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন জালিয়াতি প্রতিরোধক নয় এবং দেশটির নির্বাচন কমিশনকে স্বচ্ছ ও নিরাপদ ভোট গ্রহণ ব্যবস্থার কথা চিন্তা করা উচিত।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বেন আডিডা, মাইক্রোসফট গবেষক ড. জোশ বেনালো ও পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাট ব্লেইজ। তারা বলেন, ‘ইভিএম তৈরির পর নতুন ধরনের নিরাপত্তা হামলার বিষয় জানা গেছে ও ইভিএমের নিরাপত্তার বিষয়টি পুরনো হয়ে গেছে।

বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী ফলাফলের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা ও যাচাইযোগ্যতা ভারতীয় ইভিএম দিতে পারে না।’ জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের সভাপতি নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ‘ভারত সফল হলেও এ পদ্ধতিতে ব্যর্থ হয়েছে অধিকাংশ দেশ। আমাদের দেশে যে মেশিনটা তৈরি করা হয়েছে তা আধুনিক তবে অত্যাধুনিক নয়।

এইটুকু ছিল কেবল ইভিএম নিয়ে। এবার দেখুন সুপ্রীম কোর্টের কাজটা কি?

সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রকাশ হওয়া ‘অ্যা ব্রোকেন ড্রিম: রুল অব ল’, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি’ বইটি নিয়ে তোলপাড় সর্বত্র। এই বইতে তার পদত্যাগ থেকে দেশত্যাগ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যা যা ঘটেছিল তার সবই তুলে ধরেছেন। এই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ১লা জুলাই বঙ্গভবনে এসকে সিনহাকে প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল কি বলেছিলেন সেই কথাও পুরোটা তুলে ধরেছেন।

এসকে সিনহা লেখেন, “জুলাই মাসের ১ তারিখ, ২০১৭। সকালবেলা আমার ব্যক্তিগত মোবাইলে একটা কল আসলো। নিজেকে তিনি প্রেসিডেন্টের মিলিটারি সেক্রেটারি পরিচয় দিয়ে জানালেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্টের সাথে দেখা করতে হবে। এই ধরণের ফোন পেয়ে আমি কিছুটা অবাক হলাম। কারণ এসব ক্ষেত্রে সবসময় আমার রেজিস্টারের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে যে কোন বৈঠকের দিন-ক্ষণ ঠিক করা হয়।

ফোনে কথা শেষ করার একটু পরেই ০১৭৩০০৯০০৯৫ নাম্বার থেকে মিলিটারি সেক্রেটারি মেজর জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন মিটিং এর রিকনফার্মেশন করে একটি এসএমএস পাঠালেন। আমি উদ্বিগ্ন এবং হতবুদ্ধি হয়ে বসে থাকলাম।

যা-ই হোক, নির্দিষ্ট সময়ের পাঁচ মিনিট আগেই আমি বঙ্গভবনে পৌছালাম।

সামনের বারান্দায় মিলিটারি সেক্রেটারি আমাকে রিসিভ করে একটি রুমে নিয়ে গেলেন। আমি শুধু অবাক হচ্ছি। কারণ বঙ্গভবনে আমি অনেকবার এসেছি, সবসময় আমাকে অভ্যর্থনার জন্য নির্দিষ্ট রুমে নিয়ে যাওয়া হতো।

কিন্তু তিনি এদিন আমাকে অফিসারদের একটা রুমে নিয়ে গেলেন। ভাঙাচুরামার্কা এক রুমে তিনি নিজে টেবিলের ওপাশে একটা চেয়ারে বসলেন এবং আমাকে সামনের সোফাতে বসালেন। আমি অপমানবোধ করতে লাগলাম এবং চিন্তা করতে থাকলাম এভাবে বসার চেয়ে বরং ভেগে যাওয়াই ভালো হবে। এইটা একজন প্রধান বিচারপতির প্রাপ্য আচরণ না।

এইসময় তিনি আমার সাথে এই সেই কথাবার্তা বলে সময় কাটাতে চাচ্ছিলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন আমি চা বা কফি খাবো কি না, আমি বললাম নো থ্যাংকস।

এভাবে পয়তাল্লিশ মিনিট সময় পার হয়ে গেলো। তারপর এক সময় তারা আমাকে প্রেসিডেন্টের রুমে নিয়ে গেলো। ওখানে উপস্থিত মানুষদের দেখে তো আমি হতবাক। প্রেসিডেন্টের সাথে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

প্রাথমিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা আর আনিসুল হক মিলে আমাকে ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায় প্রসঙ্গে চেপে ধরলেন। দীর্ঘক্ষণ তর্কবিতর্ক হলো। অ্যাটর্নি জেনারেল আমাকে বললেন, এ পর্যন্ত অসংখ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি রায় দিয়ে বিচার বিভাগের মাধ্যমে আমি যে খেদমত করেছি তার জন্য সরকার আমাকে চিরকাল মনে রাখবে। কিন্তু এখন এই একটা রায় প্রসঙ্গে দ্বিমত করে আমি সব বরবাদ করে দিচ্ছি। এই কথা শুনে আমার খুব অপমানবোধ হলো।

যখন তারা বুঝতে পারলেন যে আমাকে আমার মতামত থেকে নড়ানো সম্ভব না, তখন হঠাৎ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেগে গেলেন।  তিনি  বললেন, আমার সম্পর্কে সব গোপন খবরাখবর তার ভালো করেই জানা আছে।

তার কথাবার্তা শুনে আমি এবার পুরোপুরি বেকুব হয়ে গেলাম। আমার মনে হচ্ছিলো ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী অন্ধ হয়ে গেছেন। তার একমাত্র উদ্দেশ্য হলো পরবর্তী নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসার জন্য সুপ্রিম কোর্টকে ব্যবহার করা।

পুরো সময়টাতে প্রেসিডেন্ট নিরব দর্শক হয়ে বসে থাকলেন, মাঝে মধ্যে শুধু ছোটখাটো দু’একটা মন্তব্য করছিলেন। ঐদিন এ মিটিং এতো গোপনভাবে করা হয়েছিলো যে, সে রাতে আমাদের জন্য কোনো খাবারের আয়োজনও করা হয়নি। শেষপর্যন্ত রাত সাড়ে এগারোটার দিকে কোন সমাধান ছাড়াই মিটিং শেষ হয়ে যায়।

তখন আমার এতো ক্ষুধা লেগেছিলো যে আমি দাঁড়িয়ে ঠিকমতো ব্যালেন্স রাখতে পারছিলাম না। যন্ত্রের মতো টলতে টলতে গাড়িতে এসে উঠি এবং বাসায় পৌছার পর শুধু এক গ্লাস পানি খেয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ি। আমার অবস্থা দেখে আমার স্ত্রী খাবার দাবার নিয়ে সে রাতে আর কোনো কথা বলেনি।’’

আরও পঠিত খবর

নির্বাচন পেছানোর দাবি ঐক্যফ্রন্টের, ‘জানাব’ বলেছে ইসি

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তিন সপ্তাহ পেছানোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *