আর্থারাইটিসের জন্য ভাল করে আঙুল মেলতে পারেন না বিলি। তাই ২২ গজে সিগন্যাল দেওয়ার সময় তাঁর বাঁকা আঙুল আর শরীরের ভঙ্গিমা অদ্ভুত এক হাস্যরস তৈরি করে। যা উপভোগ করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমী আর তাঁকে হয়তো দেখতে পাবেন না। ওভার বাউন্ডারি বা বাউন্ডারির সিগন্যাল দেওয়ার সময় তাঁর অদ্ভুত ভঙ্গিমাও এখন হয়তো শুধুই স্মৃতি। একজন আম্পায়ার শুধুমাত্র উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়েও যে ক্রিকেটে বর্ণময় চরিত্র হয়ে উঠতে পারেন তার প্রকৃত উদাহরণ ছিলেন বিলি বাউডেন। কিন্তু, সেই বিলি বাউডেনকে এবার তাঁদের আম্পায়ার প্যানেল থেকে ছেঁটেই ফেলল নিউজিল্যান্ড।
ক্রিকেটাররা যেমন খারাপ ফর্ম আর বয়সের ভারে দল থেকে বাদ পড়েন, আম্পায়াররাও তেমনি পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে প্যানেলে ঠাঁই পান। উইকেটের পিছনে দাঁড়ানো আম্পায়ারকে শুধু সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচক্ষণ হলেই হয় না, তাঁর চোখ-কান ঠিকঠাক কাজ করছে কি না বা শরীর মাঠের থাকার ধকল নিতে পারছে কি না, তার প্রমাণও দিতে হয়।
২০১৩ সালে আইসিসি প্রথমে তাঁদের আম্পায়ারদের এলিট প্যানেল থেকে বিলি বাউডেনকে বাদ দেয়। কিন্তু, ২০১৪ সালে ফের প্যানেলে ঠাঁই পান বিলি। কিন্তু, ২০১৫-র মে মাসে বার্বাডোজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড ম্যাচের সময় তাঁকে ফের প্যানেল থেকে বাদ দেওয়ার কথা জানায় আইসিসি। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর দেখা যায়নি বিলিকে। এবার নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডও তাঁদের আন্তর্জাতিক প্যানেল থেকে বিলি বাউডেনকে বাদ দেওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসরে বিলির আম্পায়ারিং দেখতে পাওয়া এখন কার্যত মিরাক্যল ছাড়া আর কিছুই নয়।
আর্থারাইটিসের জন্য ভাল করে আঙুল মেলতে পারেন না বিলি। তাই ২২ গজে সিগন্যাল দেওয়ার সময় তাঁর বাঁকা আঙুল আর শরীরের ভঙ্গিমা অদ্ভুত এক হাস্যরস তৈরি করে। যা উপভোগ করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
এমনকী বিলির বিচিত্র আচরণ ক্রিকেটারদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ককে করেছে মধুর। ম্যাকগ্রা ‘নো’ বল করায় পকেট থেকে রেড কার্ড বের করে দেখিয়েছিলেন বিলি। ম্যাকগ্রা হাসি চেপে রাখতে পারেননি। শেন ওয়ার্ন ও বিলির মধ্যে মাঠের খটাখটি ছিল দেখার মতো। অস্ট্রেলিয়া-ভারত ম্যাচে মাঠে মৌমাছির ঝাঁকের হানা। শুয়ে পড়েছেন অনিল কুম্বলে ও ম্যাথু হেডেন। আর বিলি দু’জনের মাঝখানে হাত-পা ছড়িয়ে বসে মৌমাছি তাড়াচ্ছেন।
৮৪টি টেস্ট ও ২০০টি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলিয়ে বিশ্ব ক্রিকেট হয়তো বিদায় জানিয়েই ফেলেছেন বিলি বাউডেন। তার আগে ডিকি বার্ড, ডেভিড শেফার্ড ছাড়া ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসাবে বর্ণময় চরিত্র কেউ হতে পারেননি। ক্রিকেট খেলা চলবে। কিন্তু, থেকে যাবে বিলি বাউডেনের মতো ক্রিকেটের বর্ণময় চরিত্র। যাঁদের অভাব সবসময়ে অনুভব করবেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।