জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ফলে আগামী দিনে দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা নিয়ে আর কোনও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না জামায়াত।
গতকাল রবিবার (২৮ অক্টোবর) কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।
এর আগে হাইকোর্ট ২০১৩ সালের এক রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন। উচ্চ আদালতের রায়ের ৫ বছর পর দলটির নিবন্ধন বাতিল বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করলো ইসি।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জামায়াতের পক্ষ থেকে আপিল বিভাগে একটি আবেদন করা ছিল। এজন্যই কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেনি এতদিন।
তবে সম্প্রতি কমিশন মনে করেছে, আপিল আবেদন হলেও তা স্থগিত না থাকায় হাইকোর্টের রায় প্রতিপালনে কোনও বাধা নেই, তাই দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়া গেছে। ওই রায়ের প্রতিপালন করতেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।’
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ (আরপিও)-এর আওতায় রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের জন্য আরপিওর ৯০বি আর্টিকেলের শর্তানুযায়ী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে দলটিকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছিল।
হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা রিট পিটিশনের দেওয়া রায়ে আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করায় আরপিওর ৯০এইচ-এর উপ-ধারা ৪ অনুযায়ী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
২০১৩ সালের ১ আগস্ট প্রদত্ত রায়ে (হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক রিট পিটিশন নং-৬৩০/২০০৯-এর ওপর) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট।
ইসির ওয়েবসাইট সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর দলটিকে নিবন্ধন দেয় ইসি। জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচনি প্রতীক ছিল দাঁড়িপাল্লা। দলটির ভারপ্রাপ্ত জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন রফিকুল ইসলাম খান।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অনেকেরই ইতোমধ্যে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। দলটির বিরুদ্ধেও রয়েছে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ। এ অবস্থায় আইন করে দলটি নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ার মধ্যে নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করলো নির্বাচন কমিশন।