বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কি রায় হতে পারে তা আগেই অনুমান করা যায়। এর জন্য খুব বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার প্রয়োজন নেই।’
বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত ছাত্র ফোরাম আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রায় বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।
নজরুল বলেন, ‘আমরা এমন একটা সময় অতিক্রম করছি। যখন কেউ সুবিচার পাচ্ছে না। যে দেশের বিচারককে রায় দেয়ার কারণে দেশ ছাড়তে হয়, সে দেশে কেউ বিচার পাবে তা বলা যায় না।’
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মামলার অভিযোগকারীই হলো মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। যে কাহার আকন্দ অভিযোগ করেছেন তারেক রহমান ২১ শে আগস্টের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাকেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বানানো হয়েছে। বিচারের ইতিহাসে এটা বিরল।’
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ‘এই বিষয়ে সুবিচার করার সুযোগ যদি কখনো হয় তাহলে অবশ্যই সুবিচার হবে। কারণ ২১ শে আগস্টের মামলায় সুবিচার তো আমাদের নেত্রীই প্রথম চেয়েছেন। সুষ্ঠু তদন্তের জন্য শুধু দেশীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, ইন্টারপোলের প্রতিনিধি আনা হয়েছিল। হুজি নেতা মুফতি হান্নানকে আমরাই গ্রেফতার করেছিলাম। যদি বিএনপি এ বিষয়ে জড়িত থাকতো তাহলে তো মুফতি হান্নানকে সরিয়ে দিলেই হয়ে যেত। বন্দী করে রাখার প্রয়োজন ছিল না। আমরা বুঝতে পারিনি আওয়ামী লীগ কোনোদিন এভাবে মুফতি হান্নানকে ব্যবহার করবে। তাই সুবিচারের জন্য সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। তাই জনগণের কাছে দায়বদ্ধও নয়। তারা যেভাবে জোর করে ক্ষমতায় এসেছে, সেভাবে জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চান। বিচার চলাকালে বিচারাধীন মামলা নিয়ে মন্তব্য করা যায় না এটা জানার পরও প্রধানমন্ত্রী বার বার বলেছেন খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করেছেন।’
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘আমরা যা কিছু করেছি সব প্রকাশ্যে করেছি। আর এই সরকারের আমলে আইনে নেই কিন্তু সব কিছু করা হচ্ছে। এই অবস্থা মোকাবিলা করতে আমাদের আরো ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
নজরুল বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করেছিলেন আওয়ামী লীগ। অথচ তারা এখন খারাপ হয়ে গেছে। মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আবদুর রব সবাই তাদের লোক ছিল। কিন্তু তারা এখন আওয়ামী লীগের কাছে খারাপ হয়ে গেছে। কারণ আওয়ামী লীগের খারাপ কাজগুলো পছন্দ করেন না বলে তারা সবাই বের হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগ থেকে।’
বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের দাবি প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি দলের নেতা বলেছেন বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে নিষিদ্ধ করা হোক। যিনি বলেছেন, তাদেরকে এক সময় সন্ত্রাসী বলেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী এমপিদের হত্যা করেছে ওই দলটি। কিন্তু এখন তারা সন্ত্রাসীও নেই। কোন সমস্যাও নেই। কারণ তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে।’
সম্মিলিত ছাত্র ফোরামের আহ্বায়ক নাহিদুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খালেদা ইয়াসমিন প্রমুখ।