সদ্য অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশকে সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বড় জনসমাবেশ বলে দাবি করছে দলটি। তবে তাদের এ দাবিকে নাচক করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারা। মুঠোফোনে যুক্ত হন ক্ষমতাসীন দলের একাধিক শীর্ষ নেতা। তাদের প্রতিক্রিয়াগুলো তুলে ধরা হলো:
এ বিষয় কথা হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব) ফারুক খান বলেন, ‘বিএনপি সমাবেশ করেছে এটা ভালো সংবাদ। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। গণতান্ত্রিক দেশে যে কোনো দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। তারা পুলিশের অনুমতি নিয়ে নিয়ম মোতাবেক গণতান্ত্রিক সমাবেশ করেছে। এটা ভালো কথা। তবে সমাবেশে অনেক বক্তারাই অগণতান্ত্রিক বক্তব্য দিয়েছে। যা অসাংবিধানিক, দেশের আইন বিরোধী।’
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় বিএনপির সমাবেশে যারা এসেছে তাদের মধ্যে অনেকেই বিএনপির নেতাকর্মী নয়। বিএনপি অর্থ দিয়ে লোকজন ভাড়া করে আনতে পারে। দলটি টাকা দিয়ে দেশে প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছিলো। অতীতে দেখা গেছে তারা অর্থের ব্যবহার করে দেশে বিভিন্ন ধরণের অনর্থ, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করেছে।’
বিএনপির সমাবেশ ফেল করেছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম। তিনি বলেন, ‘তাদের সমাবেশে লোকজন হয়নি। সমাবেশে লোক না হওয়ায় তারা এখন আওয়ামী লীগকে দোষ দিবে। রাজনীতিতে দেওলিয়াত্ব হলে এমনটি বলতে পারে।’
নামিন আরও বলেন, ‘আর যে সকল লোকজন বিএনপির সমাবেশে এসেছে তারা হচ্ছে ভাড়া করা লোক। বিএনপির রাজনীতিই শুরু হয়েছে ভাড়া করে লোক এনে। এতে আর্শ্চয হওয়ার কিছু নেই। এটাই তাদের সমাবেশে শোভা পাবে। বিএনপির অতীত ইতিহাস পর্যালোচনা করলেও এটা দেখা যাবে। অতীতে দেখা গেছে লোক ভাড়া করার টাকা বন্টন নিয়ে সমাবেশেই ঝগড়া হয়েছে। বহুবার এগুলো পত্র-পত্রিকায় এসেছে।’
বিএনপির সমাবেশে আশানুরুপ লোকের সমাগম হয়নি দাবি করে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কিছু লোক হওয়াই স্বাভাবিক। তাদের সমাবেশে সাড়াদেশের লোক এসেছে, সে তুলনায় জনসমাগম কম হয়েছে। ১৬ কোটি লোকের দেশে কিছু লোক এসেছে এটা নিয়ে ভাবার কিছু নেই। জনগণ তাদের ডাকে সাড়া দেয়নি। জনগণ আওয়ামী লীগ সরকারে উন্নয়নের পক্ষে রয়েছে।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশে যে লোক এসেছে তাদের মধ্যে অনেকেই হচ্ছে উৎসুক জনতা।’
বিএনপির সমাবেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানোর কিছু নেই জানিয়ে আওয়ামী লীগে উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানোর কিছু নেই। বিএনপি একটি রাজনৈতিক শক্তি। তারা দীর্ঘ দিন দেশে সহিংস আন্দোলন করেছে। আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। সরকারি সম্পদ নষ্ট করেছে। এখন তারা গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি অনুসরণ করে সভা-সমাবেশ করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘জনশান্তি-জনশৃংখলা, আইম-কানুন মেনে সমাবেশ করেছে। আমি এটাকে স্বাগত জানাই। তাদের গণতান্ত্রিক নীতি মেনে আন্দোলন করা উচিত। বিএনপি যদি আন্দোলনের নামে, সমাবেশের নামে আবারও জনশৃংখলা বিনষ্ট করার চেষ্টা করে তাহলে সরকার আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে। তারা আগে সমাবেশ দিত মানুষ পোড়ানোর জন্য। এখন তারা যদি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাবেশ করে জনশৃংখলা বিনষ্ট না হয় তাহলে তারা সমাবেশ করবে, এটা ভালো বিষয়। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের জন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’