বাল্য বিবাহের কুফল ও প্রভাবঃ
১.নারী শিক্ষার অগ্রগতি ব্যাহত হওয়া ছাড়াও বাল্য বিবাহের কারনে মাতৃমৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মা হতে গিয়ে প্রতি ২০ মিনিটে একজন মা মারা যাচ্ছেন। গর্ভপাতের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। প্রতিবছর গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসবকালীন সমস্যার কারণে কমপক্ষে ৬০ হাজার বাল্যবধূ মারাও যায়।
২. প্রতি ঘন্টায় মারা যাচ্ছে একজন নবজাতক। নবজাতক বেঁচে থাকলেও অনেক সময় তাকে নানা শারীরিক ও মানষিক জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়।
৩. বাল্যবিবাহের প্রথম শিকার হয় শিশু, দ্বিতীয় শিকার নারী এবং তৃতীয় শিকার সমাজ। কম বয়সে মা হওয়ার কারণে মা ও গর্ভের সন্তানের শরীরে রক্তশূন্যতাসহ নানা ধরনের রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। বাল্যবিবাহের পরিণতিতে শুধু শিশু, অল্প বয়সী নারী বা তার পরিবারই আক্রান্ত হয় না, এতে দেশ হয় অপুষ্টি ও দুর্বল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উত্তরাধিকারী। অপ্রাপ্তবয়স্ক মা প্রতিবন্ধী শিশু জন্মদান করতে পারে।
৪. বাল্যবিবাহ শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি করে না, পারিবারিক, সামাজিক এবং সর্বোপরি রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধনেও সহায়ক হয়। বাংলাদেশে জন্মহার হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে প্রধান দুটি অন্তরায় হলো বাল্যবিবাহ ও অল্প বয়সে সন্তানধারণ। ফলে অগ্রিম একটি জাতি জন্ম গ্রহণের ফলে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৫. বাল্য বিবাহের ফলে বিবাহ বিচ্ছেদের আশংকা তৈরী হওয়া ছাড়াও নানা পারিবারিক অশান্তি দেখা দেয়।
৬. স্কুল কলেজ গামী ছাত্র/ছাত্রীদের হ্রাস করে।বাল্য বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে মেয়েরা পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
৭. প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় বিবাহিত কিশোরীরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যার কবলেও পড়ে। শারীরিক গঠন পূর্ণাঙ্গ হওয়ার আগেই বিয়ে অতঃপর সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে বাল্যবধূরা পুষ্টিহীনতায় ভোগে। অপুষ্টির মধ্যে শারীরিক নানা উপসর্গ দেখা দেওয়া সত্ত্বেও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে অসচেতনতার কারণে গর্ভবতী হয় সে। তা ছাড়া গর্ভধারণের বয়সে উন্নীত হওয়ার আগেই অল্প বয়সী বালিকাদের বিয়ে দিলে পরবর্তী সময়ে যে গর্ভসঞ্চার হয়, তা নবজাতক ও মা উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক ও ক্ষতিকর হতে পারে।
৮. স্বামী, সংসার, শ্বশুরবাড়ির সম্পর্কে বুঝে উঠার আগেই সংসার এবং পরিবারের ভারে আক্রান্ত হয়। অন্যদিকে শ্বশুরবাড়ির থেকেও তার উপর চাপের সৃষ্টি হয়, শুরু হয় অশান্তি, পারিবারিক কলহ, এবং সর্বোপরি পারিবারিক নির্যাতন।