নবগঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তিন নেতার দুটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। প্রথমটি ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের। দ্বিতীয়টি মইনুল হোসেনের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের আরেক উদ্যোক্তা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরীর।
প্রথম ফোনালাপটিতে শোনা যায়, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন তার বিরুদ্ধে মামলা এবং গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিবৃতি ও আইনি সহায়তা দেওয়ায় জন্য ড. কামালকে হোসেনকে বললে কামাল হোসেন তাতে অস্বীকৃতি জানান।
এতে মইনুল হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ঐক্যফ্রন্ট ত্যাগ করারও হুমকি দেন ড. কামাল হোসেনকে এবং বলেন, মইনুল হোসেনকে ছাড়া কোনো ঐক্য হবে না।
ফোনে ড. কামালকে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘কামাল ভাই, আমার যা মনে হয় আপনি যদি একটা স্টেটমেন্ট ইস্যু করতে পারেন কিনা, বিভিন্নভাবে কেস দিয়ে তাকে হ্যারাস করা হচ্ছে আমাদের ঐক্য প্রক্রিয়া যাতে অগ্রসর হতে না পারি। এবং আমরা এটা কনডেমড করি। দেখেন চিন্তা করে, দুই সেনটেন্সের একটা স্টেটমেন্ট। আজকে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আমি মনে করি একটা রিঅ্যাকশন দেয়া উচিৎ।’
জবাবে ড. কামাল বলেন, ‘আমি ঐক্যফ্রন্টকে এগুলোর মধ্যে টানতে চাচ্ছি না।’
তখন ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘তাহলে আপনি থাকেন কামাল ভাই। আই গো। আই অ্যাম নট ইন দ্যা ফ্রন্ট।’
এ ঘটনার পর আরেকটি ফোনালাপে ড. কামাল হোসেনকে কাওয়ার্ড বলে সম্বোধন করেছেন ফ্রন্টের নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এবং ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জাফরুল্লাহর সঙ্গে মইনুলের ফাঁস হওয়া ফোনালাপটি তুলে ধরা হল:
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন: আমি বললাম যে, দেখেন ড. কামাল, আমাকে আঘাত করে যে মামলা করে যে হ্যারাস করতেছে। আমি মনে করি যে, আপনার পক্ষ থেকে একটা স্টেটমেন্ট দেয়া যে, আমাদের জনঐক্যের ভেতরে একটা গণ্ডগোল সৃষ্টির চেষ্টা করতেছে। দুইটা সেনটেন্সের স্টেটমেন্ট দেন একটা। সে বলে কি জানো? আমি এই বিষয়টা ঐক্য প্রক্রিয়ার মধ্যে আনতে চাই না। বলো তো!
ডা. জাফরুল্লাহ: মুশকিল, ওরা তো এইটাই চাচ্ছে, গভমেন্ট তো এইটাই চাচ্ছে। গভমেন্ট চাচ্ছে তোমাকে আলাদা করতে। তোমাকে আলাদা বের করতে…
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন: না না, সে যদি এইটুকু দায়িত্বে না থাকে তাহলে তার সাথে থাকবো কেন? আমি বলে দিয়েছি, আমি আপনার সঙ্গে নাই তাহলে। আপনার ঐক্যফ্রন্টে নেই।
ডা. জাফরুল্লাহ: চুপ করে থাকো একটু।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন: না না, চুপ করে থাকা না। কালকে তুমি একটা স্টেটমেন্ট দিবা যে, এটা আমার ঐক্যফ্রন্টের ব্যাপার না। তা কোন ঐক্যফ্রন্ট। আমি আমার নিজের ঐক্যফ্রন্টে থাকবো। তার ঐক্যফ্রন্টে থাকবো না। দেখি তার ঐক্যফ্রন্টে কয়টা থাকে। আমার ওপর চরম বিপদ, আমি বেলের পর বেল নিতেছি।
ডা. জাফরুল্লাহ: এই সময় আমরা যদি একে অপরের পাশে না দাঁড়াই তাহলে তো সমস্যা।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন: এই সময়, এই জন্যই তো বললাম যে, দুই সেনটেন্সের একটা স্টেটমেন্ট দেন যে, মইনুল হোসেনকে যেভাবে একতরফাভাবে মামলা সিকোয়েন্স করেছে আমরা তাকে উদ্বিগ্ন। সে বলে যে, আমি এটাকে ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে আনতে চাচ্ছি না। তার কিসের ঐক্যফ্রন্ট? (উত্তেজিত হয়ে)। উইথআউট মইনুল হোসেন কিসের ঐক্যফ্রন্ট তার আছে? কিসের ঐক্যফ্রন্ট?
ডা. জাফরুল্লাহ: খুবই খারাপ কাজ।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন: এটা তো একটা কাউয়ার্ড। এটা কোনো কাজের না। এর পেছনে গিয়ে কোন লাভ হবে না আমাদের।
ডা. জাফরুল্লাহ: কাউয়ার্ড, কাউয়ার্ড।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন: আমার ঐক্যফ্রন্ট আমার থাকবে।