আটকের আধা ঘণ্টা পর বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীনকে পুলিশ ছেড়ে দিলেও নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর মামলায় দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে রাজধানীর কাকরাইলের নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে নিপুণ রায়কে গ্রেফতার করা হয়। এসময় একই গাড়িতে ছিলেন বেবী নাজনীন।
নিপুন রায় চৌধুরী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের পুত্রবধূ ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর মেয়ে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রথমে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরীকে আটকের বিষয়টি জানানো হয়। পরে জানা যায়- বেবী নাজনীন নন, শুধু নিপুণ রায় চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই গাড়িতে থাকায় বেবী নাজনীনকে সাময়িক আটক করা হয়েছিল।
এদিকে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন জানিয়েছেন, একই গাড়িতে নিপুণ রায় চৌধুরীর সঙ্গে ছিলেন বেবী নাজনীন। এসময় তাকেও আটক করা হয়। আধা ঘণ্টা পর তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
গত সোমবার নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন।
এর আগে নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় গতকাল বুধবার পল্টন থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার মামলা তিনটি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব বিভাগ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে পুলিশের ২১ জন, ২ জন আনসার ও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। এছাড়া কার্যালয়ের পাশে থাকা পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ কর্মীরা।
সংঘর্ষের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নিপুণ রায় চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের মধ্যে স্বৈরাচার সরকারের সন্ত্রাসবাহিনী ঢুকে পুলিশের ওপর বোতল নিক্ষেপ করে। সেই বোতল নিক্ষেপ করাকে কেন্দ্র করে আজকের এই সংঘর্ষ ঘটেছে। এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ঘটানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে (বুধবার) উৎসবমুখর পরিবেশে এই পল্টন ময়দানে বিএনপির ঢল নেমেছ। আপনারা গত দুই দিনে দেখেছেন, হাজার হাজার, লক্ষ জনতা, লক্ষ নেতাকর্মী এই উৎসবমুখর পরিবেশে বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনেতে আসছেন। আর সেখানেই এই স্বৈরাচার, এই হাসিনা সরকারের গাত্রদাহ হয়েছে।’
সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় বুধবার রাতেই পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। তিন মামলায় আসামি করা হয় ৪৮৮ জনকে ও এরইমধ্যে গ্রেফতার করা হয় ৬৮ জনকে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, একটি মামলার এজাহারভুক্ত ১২ নম্বর আসামি নিপুণ রায় চৌধুরী।