‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা’ জীবনানন্দের ‘বনলতা সেন’ আর নেই। ঘন কালো চুলের চেয়ে এখনকার মেয়েদেরে বাহারি রংয়ের চুলের প্রতি ভালবাসা বেশি। কালো চুলের জায়গা কেড়ে নিয়েছে নানা রংয়ের চুল। চুলকে নানা রং-এ রঙ্গিন করতে নিজের যে সর্বনাশ বয়ে আনছে তা জানেনা অনেকই। চুলে রং করতে যা যা ব্যবহার করা হয় তা মূলত নানা রাসায়নিকে তৈরী। আর এগুলো শুধু চুল নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর।
১. অনেকেরই অ্যালার্জির সমস্যা আছে। চুলে রং করার সময় রাসায়নিকের সংস্পর্শে আসা মাত্রই অ্যালার্জির সমস্যা শুরু হয়ে যায়। চুল রঙ করার প্রসাধনে পিপিডি থাকে যা অনেক বেশি অ্যালার্জি উদ্রেককারী। আর এই রাসায়নিকের প্রভাবে মাথার ত্বকে চুলকানি, জ্বালা, ফুলে যাওয়া, র্যাশ ওঠা, খুশকি সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও অ্যালার্জি যদি মারাত্মক পর্যায়ে চলে যায় তাহলে চোখ ফুলে যাওয়া, চোখ, নাক ও মুখের চারপাশের ত্বকে অ্যালার্জির প্রকোপে র্যাশ দেখা দিতে পারে।
২. চুল উঠে যাওয়া একটি মারাক্তক সমস্যা যা চুলে রং করলে হতে পারে। চুল রংয়ের ক্ষতিকর রাসায়নিক চুলের ফলিকল একেবারেই নষ্ট করে দেয়। ফলে চুলের মাঝখান থেকে চুল ভেঙে যেতে শুরু করে এবং নতুন চুল গজানোতেও বাধা সৃষ্টি করে।
৩. চুল রং করার কারণে হাঁপানির সমস্যা দেখা দিতে পারে বা হাঁপানি আগে থেকে থাকলে তা বাড়তে পারে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা নিয়মিত চুল রং করেন, তাদের ত্বকে অ্যালার্জি বা হাঁপানি হওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেশি। এখানেও কাজ করে সেই একই ক্ষতিকর রাসায়নিক পিপিডি।
৪. অবাক মনে হলেও চুলে রং করলে ক্যান্সার হতে পারে। ‘দ্য অ্যামেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি’র গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পিপিডি (paraphenylenediamine) মানুষের ডিএনএ সেল নষ্ট করে ক্যান্সারের কোষ উৎপন্ন করতে পারে। এই রাসায়নিক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতেও সক্ষম। যার ফলে স্তন ক্যান্সারের আশঙ্কাও অনেকটাই বেড়ে যায়।