আইনি প্রক্রিয়ায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, ‘আমরা আইনজীবীরা আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য অপ্রাণ চেষ্টা করেছি। যতবার সফলতার দোরগোড়ায় গেছি তখনই সরকারের কলাকৌশল আর ষড়যন্ত্রের কারণে জামিন বিলম্বিত হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভবপর নয়। একমাত্র পথ হলো, রাজপথ।
তিনি বলেন, ‘এই রাজপথে যাওয়ার জন্য এখন আপনাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদেরকে এখন নেত্রীকে মুক্ত করে নির্বাচনের দিকে এগুতে হবে। একদিকে নির্বাচন, একদিকে আন্দোলন। আন্দোলন হবে নেত্রীর মুক্তির জন্য, একটি নিরপেক্ষ সরকারের জন্য।’
শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশ থেকে তিনি এ কথা বলেন।
পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার যুক্তি হিসেবে মওদুদ আহমেদ বলেন, ‘পার্লামেন্ট কেন ভেঙে দিতে হবে এটা অনেকে বোঝে না। একটি সংসদ রেখে আর একটি সংসদ নির্বাচন পৃথিবীতে নজিরবিহীন। আমি যদি সংসদ সদস্য থাকি এবং নমিনেশন পাই তাহলে দেশের প্রশাসন এবং পুলিশ প্রত্যেকে আমার পক্ষে থাকবে। তখন আমার প্রতিপক্ষ কোনোদিন জয়লাভ করতে পারবে না। তাই আমরা ৯০ দিনের মধ্যে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়েছি।’
জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের ওপর জোর দেয়া হয়েছে, আমরা সাধুবাদ জানাই। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে আমাদের আন্দোলনের যা কিছু করা যায় করবো এবং বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো।’
নতুন প্রজন্ম আর কোনোদিন আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দেবে না উল্লেখ করে মওদুদ বলেন, ‘১১ এপ্রিল পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন কোটা পদ্ধতি তুলে দিলাম। দুই মাস যেতে না যেতেই ২৭ জুন একই পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন- কোটা পদ্ধতি থাকবে। কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর যে অত্যাচার, জুলুম করা হয়েছে, এর ক্ষোভ কোনোদিন তাদের মন থেকে মুছে যাবে না।
‘একই কাজ করা হয়েছে নিরাপদ সড়কের দাবি করা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের দাবি যুক্তিযুক্ত বললেও পরে তাদের ওপর চালিয়েছে স্টিম রোলার। অনেককে মামলা দিয়েছে। এর মাসুল সরকারকে দিতে হবে। নতুন প্রজন্ম আর কোনোদিন আওয়ামী লীগকে নৌকা মার্কায় ভোট দেবে না।’
সড়ক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম বুলগেরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় একটি বাসের ১৭ জন যাত্রী মৃত্যুবরণ করেছে। এতে সেখানকার তিনজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। আগেরকার কথা বাদ দিলাম, এই গত ঈদের সময় থেকে ২৫৯ জন সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছে। প্রতিদিন ২০ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। এ জন্য আমি সড়ক, পরিবহন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করছি।’