কারান্তরীণ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন কারা চিকিৎসকরা। আজ বুধবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, তিনি মোটামুটি সুস্থ ও ভালো আছেন। মাঝে মাঝে তাঁর শরীরে সামান্য ব্যথা অনুভূত হয়। চিকিৎসকরা বেগম জিয়াকে শুধু প্যারাসিটামল ওষুধ দেন। প্যারাসিটামল ছাড়া আপাতত তাঁর আর কোনো ওষুধ দরকার নেই বলেই জানান চিকিৎসকরা। এসময় একজন কারা কর্মকর্তা বেগম খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চান, আজ তো আপনার জন্মদিন, জন্মদিন উপলক্ষে আপনার জন্য বিশেষ কিছুর আয়োজন করবো? উত্তরে খালেদা জিয়া স্পষ্ট ভাবে বলেন, ‘আজ আমার জন্মদিন না। আমার জন্মদিন সেপ্টেম্বর মাসে।’
১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে খালেদা জিয়া জন্মদিন পালন করে আসছেন। একাধিক সূত্রে বেগম জিয়ার বেশ কয়েকটি জন্মদিনের উল্লেখ পাওয়া যায়। পরীক্ষার মার্ক-শিট অনুসারে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। বিয়ের কাবিননামা অনুসারে তাঁর জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৯ আগস্ট। পাসপোর্ট অনুসারে তাঁর জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট। কোথাও ১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্মদিন বলা হয়নি। এরপরও বেগম জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই শোক দিবসে জন্মদিন পালন করেছেন। জাতীয় শোক দিবসের মহিমাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও কটাক্ষ করতে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে তিনি এই নকল জন্মদিন পালন করেন।
অতিসম্প্রতি বেগম জিয়ার পৈশাচিক নকল জন্মদিন আয়োজনে ভাটা পড়েছে। গত দুই বছর ধরে রাজনৈতিক কারণেই বেগম জিয়া শোক দিবসে নকল জন্মদিন পালন করছেন না। আর এবার তো কারাগারে তাই ঘটনা করে জন্মদিন পালনের কোনো উপায়ই নেই।
১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার নকল জন্মদিন পালন নিয়ে অনেক বিতর্ক ও সমালোচনা দেখা গেছে। তবে বর্তমানে কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া তাঁর প্রকৃত জন্মদিনের কথা বলে, সত্য কথা স্বীকার করে নিলেন।
কথায় আছে, বিপদে পড়লে মানুষ সত্য কথা বলে। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ খালেদা জিয়া। গত ছয়মাস ধরে কারাগারে থেকে ঘোর বিপদে তাঁর মুখ খুলেছে। আর এবার ওই খোলা মুখ থেকে কিছু সত্যও পাওয়া যাচ্ছে, যা কিছুটা বিরলই বলে মনে করেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
খালেদা জিয়ার জন্মদিন নিয়ে স্বীকারোক্তির পর দেশের রাজনৈতিক মহলে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যে বঙ্গবন্ধুর জন্যই খালেদা জিয়ার সংসার টিকেছিল, তাঁর মৃত্যু দিবসকেই হেয় করতে দুই দশকের বেশি সময় ধরে কেউ পৈশাচিক আনন্দ কেউ করতে পারে। যদি এমন কাজ কেউ করে, তাহলে সে কেমন মানুষ?
NewsReport24.com