কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে চলা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই বিচার বলবে।
রবিববার (১৪ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য কারা অভ্যন্তরে যে আদালত স্থাপন করা হয়েছে তা অবৈধ দাবি করে মামলার বিচারকাজ স্থগিত চেয়ে রিভিশন আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। একই সঙ্গে আবেদনটিতে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে কারা অভ্যন্তরে স্থাপিত আদালতে তার বিচার চলবে বলে আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তা বাতিল চাওয়া হয়।
পুরান ঢাকার বকশিবাজারের নাজিমুদ্দিন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে অবস্থতি অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে বিচার কাজ চলছে। গত ২১ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ আদালতে না আসায় তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে বলে আদেশ দেন বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
উল্লেখ্য, এই মামলার কার্যক্রম চলছিল রাজধানীর বকশীবাজার এলাকার সরকারি আলিয়া মাদরাসা ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত স্থাপিত ড. আখতারুজ্জামানের বিশেষ জজ আদালতে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি হওয়ায় তাকে হাজির করা হয়নি এই আদালতে। খালেদা জিয়া ‘অসুস্থ’ জানিয়ে একাধিকবার তাঁকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ।
আইন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর সেখানে আদালত বসেন। কারাগারে থাকা খালেদা জিয়া সেদিন আদালতে হাজির হয়ে আদালতকে বলেছিলেন, ‘আমার শারীরিক অবস্থা ভালো না। আমার পা ফুলে গেছে। বসে থাকলে আমার পা ফুলে যাবে। ডাক্তার বলেছে, পা ঝুলিয়ে রাখা যাবে না। এখানে আমি আদালতে বারবার আসতে পারবো না। আপনাদের যা মনে চায়, যতদিন ইচ্ছা সাজা দিয়ে দিন।’
আদালতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমার মেডিকেল রিপোর্ট এখানে আছে। মেডিকেল রিপোর্ট দেখেন। তাতেই বুঝতে পারবেন।’
আদালত থেকে চলে যাওয়ার সময় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন। এখানে ৭ দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। কিন্তু গতকাল কেন গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। কেন আমার আইনজীবীরা গেজেট পায়নি।’
তাঁর বাম হাত দেখিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমার শারীরিক অবস্থা ভালো না। এ হাতটা ইয়ে হয়ে গেছে, ডান পা বাঁকাতে পারি না। আমি খুবই অসুস্থ। আমি বারবার এখানে আসতে পারবো না। ওরা (আদালত) যা খুশি তাই করুক।’