প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা এতে অংশ নিয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত থেকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে শাহবাগের চৌরাস্তার মোড়ে আন্দোলনকারীরা অবস্থান নেন। এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত তারা ব্যারিকেড তৈরি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্যরা বলছেন, আগামী ২ দিনের মধ্যে যদি তাদের দাবি মেনে নেয়া না হয় তাহলে শনিবার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় মহাসমাবেশ করবেন তারা।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান দুপুরের দিকে শাহবাগে আন্দোলন নিয়ে আলাপে এ কথা জানান।
৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখা ছাড়াও তাদের অন্য দাবিগুলো হলো- মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য সুরক্ষা আইন, রাজাকারের সন্তানদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না দেয়া ও তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা।
এসময় প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সব সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সব ধরনের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভের অংশ হিসেবে গতরাত ৮টা থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজধানী শাহবাগের চার রাস্তার মোড়ে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
লক্ষ্মীপুর জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলহাজ মোঃ মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা এদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। আর তাদের কথা বাদ দিয়ে কখনও বাংলাদেশের কথা ভাবা যায় না। এই কোটা আন্দোলন করে যেসব শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন, জ্বালাও, পোড়াও, ভাঙচুর চালিয়েছিল তারা কখনোই এদেশের ভালো চায় না। তারা রাজাকার-আলবদরদের দোসর। সামনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের একটি বড় টার্গেট হল সরকার হটানো এবং সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা। আমরা চাই দ্রুতই আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০ শতাংশ কোটা ফিরিয়ে দেবেন।’
এদিকে বিক্ষোভে টিএসসি থেকে বিএসএমএমইউ, মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ হয়ে কাঁটাবনগামী রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব রাস্তায় কোনেও ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের এডিসি এইচ এম আজিমুল হক জানান, সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ভোরের দিকে দেখা করেছে। তাদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। তাদের সাথে কথা হয়েছে। তারা কথা রেখেছিল। কিন্তু ৯টা থেকে আবারও অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘আমাদের সাথে তাদের কথা হয়েছে। তারা রাস্তা বন্ধ করে কাউকে ভোগান্তিতে ফেলবেন না এবং কোনো রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি ওষুধের গাড়ি কিংবা সংবাদপত্রের গাড়ি আটকাবে না বলে জানিয়েছে।’
আন্দোলনকারী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান জানান, তারা দ্রুত শাহবাগের মূল চত্বর থেকে সরে যাবেন এবং এ ব্যাপারে আজ আলাপ-আলোচনা হবে। তারপর তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে তারা শাহবাগ থেকে সরে গিয়ে জাতীয় জাদুঘরের আশপাশে অবস্থান নেবেন।