চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৪৪ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে সরকার। এর মধ্যে পণ্য রপ্তানি খাতে ৩৯ বিলিয়ন এবং সেবা খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার। গত বছর পণ্য ও সেবা খাতের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার। এর প্রায় পুরোটাই অর্জিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত অর্থবছরে আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। গত বছর পণ্য খাতে রপ্তানির প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৩৬ ভাগ এবং সেবা খাতে ৭ দশমিক ৪৩ ভাগ, মোট রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৪৭ ভাগ।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রপ্তানির সিংহ ভাগ আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে। এবছর তৈরি পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার। যা মোট রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার ৮৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক নতুন বাজারে রপ্তানিতে আগে ৩ শতাংশ হারে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হতো, এখন আরো একভাগ বাড়িয়ে ৪ শতাংশ হারে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। আগামীতে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ১০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করছি। ২০২১ সালে এ খাতে রপ্তানির পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়াবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে একমাত্র চামড়া খাত ছাড়া সব খাতে রপ্তানি ভালো হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক হাজার ১২৪ কোটি ডলার। কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭১১ কোটি ডলার। ৫ দশমিক ৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৫ কোটি ডলার।
এছাড়া প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ ধরে নিট পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ১৫০ কোটি ডলার। ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে ওষুধ খাতে ১১২ কোটি ডলার, ৬ দশমিক ৯৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে হোম টেক্সটাইলে ৯৪০ কোটি ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। তবে ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রপ্তানিতে গতবারের চেয়ে ১ দশমিক ১১ শতাংশ কমে চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫২ কোটি ডলার। এদিকে আরো ৯টি পণ্য রপ্তানিতে দশ শতাংশ হারে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পণ্যগুলো হলো- হিমায়িত সফটসেল কাঁকড়া, ফার্মাসিউটিক্যালস পণ্য ও ঔষধের কাঁচামাল, সিরামিক দ্রব্য, গালভানাইজড সিট বা কয়েলস, ফটোভলটাইক মডুল, রেজার ও রেজার ব্রেডস, ক্লোরিন, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, কস্টিক সোডা এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড।
তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আগামীতে দেশের রপ্তানিকারকগণ পণ্য রপ্তানিতে আরো বেশি উত্সাহিত হবেন। রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালে দেশের মোট রপ্তানি ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
গতকাল ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও অনুমোদন সংক্রান্ত সভায় বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ-এর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান ছাড়াও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।