রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে সাবিনা আক্তার চাঁদনী নামে এক পথচারী দৌড়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। রাস্তা পার হয়ে সামনেই দেখতে পেলেন বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ)’র ভ্রাম্যমাণ আদালত। এক পুলিশ সদস্য পথচারী চাঁদনীকে ডাকলেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পেরে চলে যেতে চাইলেন। পরে ওই পুলিশ সদস্য তাকে (পথচারীকে) অনেকটা জোর করেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে নিয়ে এলেন। এসময় চাঁদনী বলেন, ‘মেডাম আমাকে ছেড়ে দিন। আমি ভুল করেছি। আমি আর জীবনেও ফুটওভার ব্রিজ ছাড়া রাস্তা পার হবো না।’ এরপর বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ সাদিয়া তাজনীন চাঁদনীকে ৫০ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেন।
বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেট মোড়ে বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন। এসময় অপরাধের ধরণ অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হয় পথচারীদের।
সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশ ঘোষণা দেয়ার পর সড়কে যত্রতত্র পারাপার ঠেকাতে এবং ওভারব্রিজ ব্যবহারে বাধ্য করতেই এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে রাস্তার মাঝখান দিয়ে রাস্তা পার হতে যাওয়া নয়ন আলম নামে এক শিক্ষার্থীকেও এদিন ভ্রাম্যমাণ আদালতে আসতে হয়। জরিমানার কথা শুনে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার কাছে টাকা নেই, প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন স্যার।’
এসময় বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা বয়স ১৮ না হওয়ায় ‘ভুলবশত রাস্তা পার’ মর্মে তাকে একটি দরখাস্ত লিখতে বলেন।
হেলমেট ছাড়া এক সাংবাদিকের মোটরসাইকেলের পথরোধ করলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়েও ছাড় না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
কানে হেডফোন দিয়ে রাস্তা পারাপারের সময় তোসিফ হাসান নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করলে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি কানে হেডফোন নিলেও গান শুনছি না। রাস্তা পারাপারে আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’
বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ সাদিয়া তাজনীন ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আমরা এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে চাই না। আমরা চাই জনগণ নিজ দায়িত্বে স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলাচলের জন্য ফুটপাত, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ব্যবহার করুক। কেননা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করলে যে কোনো মুহূর্তে যে কেউ দুর্ঘটনায় পড়তে পারে। আমরা সবাই নিজ দায়িত্বে এ কাজটি না করলে ট্রাফিক দিয়ে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আমরা ওভারব্রিজ ব্যবহার না করায় ৪০ জনকে জরিমানা করেছি, হেলমেট না পরায় ১০ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।’
সিগন্যালে পারাপারের সময় আটক সাব্বির হোসেন অভিযোগ করেন, ‘আমি যখন সিগন্যাল খোলা থাকা অবস্থায় ট্রাফিকের পাশ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে মৎস্যভবনের দিকে যাচ্ছিলাম, তখন আমাকে কেউ পার হতে বাধা দেয়নি। কিন্তু রাস্তার মাঝামাঝি এসে আটকালো। এখন জরিমানার টাকা দিতে ১০ মিনিটের মতো আটকে আছি। টাকা না দিলে ছাড়বে না।’