Breaking News
Home / রাজনীতি / ঐক্যফ্রন্ট নেতারা কে কোন আসনে?

ঐক্যফ্রন্ট নেতারা কে কোন আসনে?

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট কলেবর বাড়িয়ে এখন ২৩ দলীয় জোটে রূপ নিয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক বিএনপি ছাড়াও রয়েছে আরও ৪টি দল। সেগুলো হচ্ছে- গণফোরাম, জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। তাই সব মিলিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন বণ্টন ইস্যুতে এবার বিএনপিকে ২৭টি দল নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করতে হচ্ছে।

এরই মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের শরিকরা বিএনপির কাছ থেকে শতাধিক আসন দাবি করেছে। তবে বিএনপি বলছে, জয়ী হওয়ার মতো প্রার্থী থাকলে শরিক দলগুলোকে আসন ছাড়তে তাদের কোনও আপত্তি নেই।

এদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিজ নিজ এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। কেউ কেউ একাধিক আসনেও নির্বাচনের কথা ভাবছেন।

আমানউল্লাহ আমান ঢাকা–২
কেরানীগঞ্জ উপজেলা আগে ঢাকা–৩ আসনের অন্তর্ভুক্ত থাকলেও ২০০৮ থেকে এটি ঢাকা–২ ও ঢাকা–৩ আসনে ভাগ হয়ে যায়। ১৯৮৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে ঢাকা–৩–এর সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। এ আসনের চারবারের এমপি আমান এবার ঢাকা–২ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঢাকা–৩
ঢাকা–৩ থেকে বিএনপির মনোনয়ন চাইছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ২০০৮–এর নির্বাচনে তিনি হেরে যান আওয়ামী লীগের নসরুল হামিদের কাছে।

টাঙ্গাইলে দুটি আসনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
সখীপুর ও বাসাইল উপজেলা নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল–৮ এবং কালিহাতি উপজেলা নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল-৪ এ দুটি আসন থেকে এবার নির্বাচন করতে চান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

টাঙ্গাইল-৮ আসনে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ এবং ২০০১ সালে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হয়ে সাংসদ হন কাদের সিদ্দিকী। ২০০৮ সালে নিজ দলের প্রতীকে লড়ে হেরে যান আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে। এবার তিনি দুটি আসনে নির্বাচন করতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। দুটি না পেলে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসন তিনি হাতছাড়া করতে চাইবেন না।

মাহমুদুর রহমান মান্নার আসন বগুড়া-২
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে আসন নিয়ে সবচেয়ে সুবিধায় আছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। বিএনপির দূর্গ হিসেবে পরিচিত বগুড়া-২ আসনে তার মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত। ৭৩ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচনের পর এ আসনে আর কখনো নৌকা জেতেনি।

তবে মান্নাকে বগুড়া-২ আসন থেকে মনোনয়ন দিলে বিদ্রোহী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের পরপর দুই বারের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি ও বগুড়া জেলা বিএনপির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক বিউটি বেগম।

ডাকসুর সাবেক ভিপি মান্না ১৯৯১ থেকে তিনবার এ আসনে নির্বাচন করেছেন। প্রথমবার জনতা মুক্তি পার্টির হয়ে, পরের দুবার ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। জিততে পারেননি একবারও। তবে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হলে বিএনপি–জামায়াতের সমর্থন কাজে লাগিয়ে আগামী নির্বাচনে এগিয়ে থাকবেন তিনি।

অলি আহমদের আসনে সুব্রত
চন্দনাইশ উপজেলা ও সাতকানিয়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম–১৪ আসনটি ২০০৮–এর আগে চট্টগ্রাম–১৩ আসন ছিল। এ আসনের চারবার এমপি নির্বাচিত হন সাবেক বিএনপি নেতা ও বর্তমানে এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ।

২০০৮ সালে এ দুটি আসন থেকেই প্রার্থী হন তিনি। আগামী নির্বাচনেও ২০–দলীয় জোটের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে এ দুই আসনে তার প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা আছে।

তবে গণফোরামের সূত্র বলছে, অলি আহমদ চট্টগ্রাম–১৩ থেকে লড়বেন। চট্টগ্রাম–১৪ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে মনোনয়ন চাচ্ছেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী।

এ এলাকায় জামায়াতেরও প্রার্থী আছে। ১৯৯১ ও ২০০১ সালে শাজাহান চৌধুরী এবং ২০০৮ সালে শামসুল ইসলাম জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। এবারও তারা দলের নিবন্ধন না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়ন কিনেছেন।

আ স ম রব লক্ষ্মীপুর-৪
লক্ষ্মীপুর বরাবরই বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯৬ সালে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে জয়ী হলেও ১৯৯১,২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির কাছে হেরে যান তিনি। এবার ঐক্যফ্রন্টের হয়ে এ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়তে পারেন তিনি।

বিএনপি ও জেএসডির মধ্যে প্রতিবার লড়াই হয় এ আসনে। বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা হলে রবের জন্য অবস্থা এবার সুবিধাজনকই হবে।

কুমিল্লা-৪ আসনে আবদুল মালেক রতন
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন কুমিল্লা–৪ (দেবীদ্বার) থেকে ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়নপ্রত্যাশী। ১৯৯১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত এ আসনটি বিএনপির দখলে ছিল। ওই সময়ে চারবারই বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মনজুরুল আহসান মুন্সী।

কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মনজুরুল আহসান আইনি জটিলতার কারণে ২০০৮ সালে নির্বাচন করতে পারেননি। এবারও দলের হয়ে মাঠে আছেন তিনি। স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীরা তাঁকেই আবার প্রার্থী হিসেবে চান। তাই ঐক্যফ্রন্টের মনোনয়ন নিয়ে বিএনপি ও জেএসডির মধ্যে সমঝোতা লাগবে।

সুলতান মনসুর মৌলভীবাজার–২
কমলগঞ্জ ও কুলাউড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত মৌলভীবাজার–২ আসনে এবার ঐক্যফ্রন্টের হয়ে লড়তে পারেন সাবেক ডাকসু ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর। এ আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে তিনবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একবার এমপি নির্বাচিত হন তিনি।

এ আসনে বিএনপির কখনোই ভালো অবস্থান ছিল না। বর্তমানে জাতীয় পার্টির দখলে থাকলেও সুলতান মনসুরের মাধ্যমে এটি দখলের স্বপ্ন দেখছেন বিরোধী দলের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। সুলতান মনসুর বর্তমানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে এস এম আকরাম
নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এস এম আকরাম নির্বাচন করতে চান জন্মস্থান নারায়ণগঞ্জ থেকে। আওয়ামী লীগের হয়ে ১৯৯৬ সালে নারায়ণগঞ্জ–৫ আসনে এমপি নির্বাচিত হন তিনি। দলীয় বিভেদে পরে যোগ দেন নাগরিক ঐক্যে। ঐক্যফ্রন্টের হয়ে এ আসনে এবার প্রার্থী হতে চান তিনি। যদিও বিএনপির গত ছয়বারের প্রার্থী আবুল কালাম এবারও এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইছেন।

আর বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার ব্যানারে সিলেট-১ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা গেছে, ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলো যার যার মতো করে নিজেদের চাহিদার তালিকা তৈরি করছে, যা বিএনপি সংশ্লিষ্ট নেতাদের হাতে জমা দেয়া হচ্ছে।

এর মধ্যে শরিক দলগুলোর মধ্যে যোগ্য প্রার্থী কে কোন আসনে আছেন, সে বিষয়ে বিএনপিও খোঁজখবর নিচ্ছে। দু–একদিনের মধ্যে এ নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আলাদাভাবে বসবে বিএনপি।

এ ব্যাপারে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আসনের ব্যাপারে আমার দলের কোনও দাবিদাওয়া নেই। আমরা একসাথে সবাই বসে কে কতটা আসন নেবেন সেটা ভাগাভাগি করে নেবো।’

আরও পঠিত খবর

জাপার মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু

একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আজ রবিবার থেকে মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করবে জাতীয় পার্টি। শনিবার গণমাধ্যমে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *