কালকে থেকে যাদের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে, তাদের প্রতি:
এক। আজকে রাত এগারোটার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ো। ঘুমাতে যাওয়ার আগে কালকের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু গুছিয়ে রেখো।
দুই। পরীক্ষা চলাকালীন ১ মিনিটও ফেসবুকে কাটিয়ো না। তোমার ফেসবুক পারফরম্যান্সের উপর পরীক্ষায় কোনো মার্কস বরাদ্দ নেই।
তিন। তোমার প্রস্তুতি যেমনই হোক না কেন, তোমার চাইতে ভাল পরীক্ষা কেউই দেবে না।—এটা মাথায় রেখে পরীক্ষার হলে যাবে। সবসময়ই মনে রেখো, ভাল প্রস্তুতি নিলেই যেমনি ভাল পরীক্ষা দেয়া যায় না, তেমনি খারাপ প্রস্তুতি নিলেই খারাপ পরীক্ষা দেয়া যায় না।
চার। পরীক্ষায় ভাল করতে প্রস্তুতির চাইতে আত্মবিশ্বাস বেশি কাজে লাগে। পরীক্ষার হলে শেষ ঘণ্টা পড়া পর্যন্ত I’m the best!—এটা মাথায় রেখে লিখে যেয়ো। পরীক্ষার হলটা কলম চালানোর জন্য, থামিয়ে রাখার জন্য নয়। লুজশিটটা হলে সবার আগে তুমিই নিয়ো! দেহে প্রাণ থাকলে, হাতব্যথা করুক, আর যা-ই ব্যথা করুক, যে করেই হোক, লিখে যেতে হবে, ০.৫ মার্কস্ও ছেড়ে আসা যাবে না। পরীক্ষা চলাকালে উচ্চশিক্ষার্থে বাথরুমে যাওয়ার প্রবণতা পরিহার কর। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই ছোট-বড়-মাঝারি সব ধরনের বাথরুম সেরে নিয়ো। পরীক্ষা ভাল হলে সারাজীবন আরাম করে বাথরুম করতে পারবে।
পাঁচ। তোমার মোবাইল ফোনটা বন্ধ করে তোমার গার্ডিয়ানের কাছে জমা দাও। এই জিনিসটা পরীক্ষাশেষে উনার কাছ থেকে ফেরৎ নিয়ো। জরুরি প্রয়োজনে উনার ফোনটা ব্যবহার কোরো। তুমি এখনো এমন বিশেষ কেউ হয়ে যাওনি যে, পরীক্ষার সময়েও তোমার কাছে মোবাইল ফোন রাখতে হবে।
ছয়। তোমার বয়ফ্রেন্ড/ গার্লফ্রেন্ড, যার সাথে তোমার ব্রেকাপ না হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ৫%, তার সাথে এই সময়টাতে যোগাযোগ রাখার অর্থ হলো, ৫% সম্ভাবনাকে টিকিয়ে রাখার লোভে তোমার জীবনটাকে নিজের হাতে ধ্বংস করে দেয়া। এইচএসসি’র প্রেম জীবনকে যতোটা সাজায়, তার চাইতে বেশি নষ্ট করে। পেছনে মেরুদণ্ড আর মনে বিন্দুমাত্রও লজ্জা থাকলে বাবা-মায়ের অন্নধ্বংস করে এই সময়টাতেও আর উনাদের ঠকিয়ো না। তোমার বাবা-মা তোমাকে অনেক বিশ্বাস করেন, সে বিশ্বাসের মর্যাদা রেখো।
সাত। পরীক্ষার ঠিক আগের রাতটা ঘুমানোর জন্য, জাগতে চাইলে অন্য রাতগুলো জেগো। ভাল পরীক্ষা দেয়ার জন্য ভাল ঘুম দরকার।
আট। এই পরীক্ষার রেজাল্টই ঠিক করে দেবে, তুমি কোথায় ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবে, আর কোথায় দিতে পারবে না। এইচএসসি’তে ফিজিক্স কেমিস্ট্রি ম্যাথসে গড়ে ০.০৬ মার্কস কম পেয়েছিলাম বলে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমি জানি, ০.৫ মার্কসের অভাব একজন ক্যান্ডিডেটকে কতটা কাঁদাতে পারে! তাই অনুরোধ করছি, নিজের প্রতি না হোক, অন্তত তোমার বাবা-মায়ের প্রতি সুবিচার করতে হলেও পরীক্ষাটা ভাল করে দিয়ো। যদি তোমার কারণে তোমার বাবা-মায়ের মাথা হেঁট হয়ে যায়, তবে নিজেকে ক্ষমা করবে কীভাবে?
নয়। প্রশ্ন সহজ হবে, নাকি কঠিন হবে, এটা নিয়ে মাথা খারাপ করার কোনো মানেই হয় না। সহজ হলে সবার জন্য সহজ, আর কঠিন হলে তো সবার জন্যই কঠিন। অসুবিধা কী?
দশ। একটা পরীক্ষা শেষ করার পর সে পরীক্ষাটা ভাল কিংবা খারাপ, যেমনই হোক না কেন, এটা নিয়ে এক সেকেন্ডও সময় নষ্ট করবে না। পরের পরীক্ষার কথা ভাবো। যা গেছে, গেছে। পেছনে ফিরে সামনের দিকে হাঁটলে আবারো হোঁচট খাবে।
টেনশন হচ্ছে, না? ব্যাপার না! ওটা হবেই! পরীক্ষার সময় টেনশন হওয়াটা একটা সাধারণ ভদ্রতা। তুমি কি অভদ্র, বলো?
পরীক্ষার সময় সুস্থ থেকো, ঠাণ্ডা মাথায় পরীক্ষা দিয়ো। পরীক্ষা ভাল হোক। তোমাদের জন্য শুভকামনা রইলো।
(পোস্টটা যতো খুশি, বন্ধুদের সাথে শেয়ার কর।)